সারনা ধর্মের স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে মশাল হাতে মিছিল করে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও আদিবাসীদের। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মালদহ সফরের ২৪ ঘণ্টা আগে, আদিবাসীদের ‘মশাল জুলুস’ কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ইংরেজবাজার শহর। সোমবার, প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের দু’টি পথেই মশাল হাতে নিয়ে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান আদিবাসী সংগঠনগুলির নেতা, কর্মীরা। তাঁদের বিক্ষোভে অস্বস্তিতে পড়েন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। পরে, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর আশ্বাস দেন তাঁরা।
আজ, মঙ্গলবার আদিবাসী প্রধান গাজলে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান রয়েছে। সে অনুষ্ঠানের ২৪ ঘণ্টা আগে, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির ছবি দেওয়া ‘ফেস্টুন’ নিয়ে আদিবাসী সংগঠনগুলির পথে নেমে আন্দোলনের ঘটনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের উত্তরবঙ্গের জ়োনাল সভাপতি মোহন হাঁসদা বলেন, “আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের কোনও বিষয় নেই। সারনা ধর্মের স্বীকৃতি ও আমাদের দেবতা মারাং বুরুকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আমরা পথে নেমেছি। দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আমাদের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলা। তাই ফেস্টুনে ছবি দেওয়া হয়েছে’’, দাবি তাঁর।
আদিবাসীদের আচমকা পথে নেমে আন্দোলন বিজেপির ‘কৌশল’ বলে দাবি তৃণমূলের। তৃণমূলের মালদহের মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের সারনা ধর্মের স্বীকৃতি নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছেন। মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের পাশে আছেন। বিজেপি আদিবাসীদের নিয়ে রাজনীতি করছে।” বিজেপির উত্তর মালদহের সভাপতি উজ্জ্বল দত্তের পাল্টা দাবি, “রাজ্যে আদিবাসীরা বঞ্চিত রয়েছেন। আদিবাসীদের ভুল বোঝানোর কোনও বিষয় নেই।”
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ শহরের বৃন্দাবনী ময়দানে হবিবপুর, গাজল, বামনগোলা, পুরাতন মালদহের আদিবাসী সেঙ্গল অভিযানের কর্মী, সমর্থকেরা জমায়েত হন। এর পরে, শহর জুড়ে মশাল হাতে নিয়ে মিছিল করেন তাঁরা। প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের দু’টি পথ আটকে মশাল হাতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। মোহন বলেন, “আমাদের দাবি পূরণ না হলে ১১ ফেব্রুয়ারি রেল ও জাতীয় সড়ক আন্দোলন করে বিক্ষোভ দেখানো হবে।” এ দিন বালুরঘাটেও জেলাশাসকের দফতরের সামনে আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের পক্ষ থেকে আন্দোলন হয়। সংগঠনের নেতা পরিমল মার্ডি জানান, সারনা ধর্মের কোড দিতে হবে। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের আদিবাসীদের আবাসস্থল পরেশনাথ পাহাড়ের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দেন সংগঠনের নেতৃত্বরা।