মেডিক্যাল কলেজের বার্ষিক পরীক্ষায় মোবাইলে উত্তর জেনে লিখে ‘ফার্স্ট’ হয়েছিল মুন্নাভাই। এখন আরও স্মার্ট হয়েছে মোবাইল ফোন। হাতের মঠোয় নানা ‘অ্যাপস’। নকল করতে ব্যবহার হচ্ছে এই সমস্ত ‘অ্যাপস’ও। জলপাইগুড়ির একটি স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় হোয়াটস অ্যাপে চলছিল প্রশ্ন উত্তরের আদানপ্রদান। শিক্ষকরা হাতেনাতে ধরে ফেলেছে এক পড়ুয়াকে। আপাতত তার মোবাইল জমা রেখে পরীক্ষা করে দেখছে কর্তৃপক্ষ। ডাকা হয়েছে তার অভিভাবককেও। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কড়া পদক্ষেপ করতে রাজি নয়। পড়ুয়া ক্ষমা চাইলেই মোবাইল ফিরিয়ে দিয়ে তাকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে নকল করার পদ্ধতি দেখে চোখ কপালে উঠেছে শিক্ষকদের।
নকল ঠেকাতে একবার পরীক্ষার মাঝপথে শৌচাগারের দেওয়াল রং করা হয়েছিল জলপাইগুড়ির একটি স্কুলে। কারণ দেওয়ালে লিখে রাখা হয়েছিল প্রশ্নের উত্তর। আরেকটি স্কুলের শৌচাগারে প্রধান শিক্ষক হঠাৎ হানা দিয়ে শতাধিক পাঠ্যপুস্তক বাজেয়াপ্ত করেছিলেন। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ক্যাসেটে রেকর্ড করে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন এক কলেজ পড়ুয়া। মাথায়-গালে ব্যান্ডেজ করা ছিল সেই ছাত্রের। পকেটে রাখা ওয়াকম্যানের তার লুকোনো ছিল ব্যান্ডেজের আড়ালে। পকেট থেকে ওয়াকম্যান বাজিয়ে উত্তর শোনার মাঝপথেই পরীক্ষকের হাতে ধরা পড়ে গিয়েছিল সেই ছাত্র। এতদুর জানা ছিল শিক্ষকদের। এ বার নকল করতে হোয়াটস অ্যাপের ব্যবহার।
কী ঘটেছিল জলপাইগুড়ির স্কুলে?
উচ্চ মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছিল নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। মোবাইল ফোন অবশ্য পড়ুয়ার সঙ্গে ছিল না। ক্লাসের বাইরে কোথাও লুকোনো ছিল। শিক্ষকদের ধারণা শৌচাগারে রাখা ছিল মোবাইল। পরীক্ষা শুরুর পরে পরীক্ষকের অনুমতি নিয়ে পড়ুয়া বাথরুমে যাওয়ার জন্য বের হয়। সঙ্গে প্রশ্নপত্রও নিয়ে যায়। হোয়াটস অ্যাপে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে কাউকে পাঠিয়ে দেয় সে। পরীক্ষাহলে ঢুকে আধ ঘণ্টা কাটানোর পরে ফের মোবাইল আনতে গিয়েই ধরা পড়ে যায় পড়ুয়া। ততক্ষণে পড়ুয়ার হোয়াটস অ্যাপে অর্ধেক প্রশ্নের উত্তর চলে এসেছিল।
হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে প্রশ্ন উত্তর আদানপ্রদান ধরা পড়েছে জলপাইগুড়ির আরেকটি স্কুলেও। কয়েকজন পড়ুয়া নিজেদের বন্ধুদের মধ্যে গ্রুপ তৈরি করেছিল। বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা সেই গ্রুপে ছিল। এক স্কুলের পরীক্ষাচলাকালীন অন্য স্কুলের পড়ুয়ারা গ্রুপে উত্তর বলে দিচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে।