চুরির পর পাচার সাইকেল

আগে ছিল মোটরবাইক, এখন হয়েছে ছোট-বড় সাইকেল। 

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

আগে ছিল মোটরবাইক, এখন হয়েছে ছোট-বড় সাইকেল।

Advertisement

শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শহরকে ঘিরে সাইকেল পাচার চক্র তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে খোদ পুলিশের কাছেই। নানা ধরনের নতুন ও পুরনো সাইকেল চুরির পরে হাতবদল হয়ে দ্রুত চলে যাচ্ছে সীমান্তের ওপারে। দুই শহরের নিকটবর্তী সীমান্ত দিয়েই নিয়মিত চলেছে এই পাচার। অভিযোগ, শুনতে সাদামাঠা মনে হলেও এই সাইকেল পাচারকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক টাকার ব্যবসা ফেঁদে বসেছে সীমান্তের একদল দুষ্কৃতী। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি এবং জলপাইগুড়ির চাউলহাটির দু’টি কাঁটাতারহীন এলাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে সাইকেল পৌঁছচ্ছে সাইকেলের দেশ বলে পরিচিত বাংলাদেশে।

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, ভারতের মতো বাংলাদেশে মোটরবাইক, স্কুটি-র থেকে সাইকেলের চল অত্যন্ত বেশি। এই চাহিদা মেটাতে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি শহরের সাইকেলের দিকে নজর দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। রোজ সাতসকালে শিলিগুড়ি শহরে ঢোকার মুখে কোনও রাস্তায় দাঁড়ালে দেখা যাবে, ঝাঁকে ঝাঁকে সাইকেল করে শ্রমিকরা কাজে আসছেন। কেউ নির্মিয়মাণ বহুতলের নীচে, কেউ দোকান বা অফিসের পাশের গলিতে, কেউ স্ট্যান্ডে সাইকেল রেখে কাজে যান। অভিযোগ, এই সব জায়গা থেকে নিয়মিত চুরি যাচ্ছে সাইকেল। সাধারণ ছিঁচকে চুরি বলে ধরে নিয়ে সব সময় সাইকেল-মালিক পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেন না। তাই তদন্তও হয় না। পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, এখানেই বাজি মেরে দেয় দুষ্কৃতী চক্র।

Advertisement

সম্প্রতি মাদক পাচারের তদন্তে নেমে বিষয়টি প্রথম পুলিশের নজরে আসে। তার পর দেখা যায়, দুই শহরেই এমন দু’টি ঘাঁটি রয়েছে।

তদন্তে দেখা গিয়েছে, সাইকেল চুরির পিছনে প্রাথমিক ভাবে রয়েছে মাদকাসক্ত থেকে একদল ছিঁচকে চোর। এক দিকে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর, চোপড়া, অন্য দিকে শিলিগুড়ি শহর, ভক্তিনগর, প্রধাননগর, এনজেপি, মাটিগাড়া থেকে নিয়মিত এই ভাবে চলছে সাইকেল আমদানি। এক একদিনে গড়ে ১০-১৫টি সাইকেল চোরাই ডেরায় জমা করা হচ্ছে। পুজোর মরসুমে সংখ্যাটা বেড়ে ৩০ ছুঁইছঁই হয়েছিল। সপ্তাহে অন্তত চার-পাঁচ দিন এমন চুরি চলে।

কী ভাবে জোগাড় করা হয় সাইকেল? পুলিশ সূত্রের দাবি, মাদকাসক্ত হলে তার হাতে মাদকের লোভ দেখানো হয়। ছিঁচকে চোর হলে সাইকেল প্রতি বরাদ্দ ৩০০-৬০০ টাকা। এই সাইকেলও মজুত করা হয় বিভিন্ন বাড়িতে। যাতে চট করে কেউ সন্দেহ না করতে পারে। ফুলবাড়ির একটি মাদকের ঘাঁটিতে সম্প্রতি অভিযান হয়। তখন মাদকের উদ্ধারেই নজর ছিল সকলের। তাই সাইকেলের দিকে সে ভাবে তাকায়নি কেউ। পরে অন্য সূত্রে খবর পেয়ে অফিসারদের টনক নড়ে।

কী ভাবে এই সাইকেল হাতবদল হয়ে ওপারে যায়, কত দামে তা বিক্রি হয়, তা-ও এক চমকপ্রদ ব্যাপার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement