চোরাশিকারের তদন্তের সাফল্যে ভরসা করিমই

সম্প্রতি চোরাশিকারিদের ফেলে যাওয়া ব্যাগে মাংসের গন্ধ শুঁকে বাইসনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে করিম। মাত্র মাত্র মাসখানেক হল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে কাজে যোগ দিয়েছে সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২০
Share:

নজরদার: স্নিফার ডগ করিম। —নিজস্ব চিত্র

নদী, জঙ্গলে ঘেরা বিশাল এলাকা। সারাদিন ধরে তল্লাশি চালিয়েও অনেককিছুই চোখ এড়িয়ে যায় বনকর্মীদের। পাহারার ফাঁক গলে কখনও চোরাশিকারিদের হাতে প্রাণ যায় বন্যপ্রাণীর। কখনও পাচারের চেষ্টা হয় বন্যপ্রাণীর দেহাংশ। কিন্তু এখন ছবিটা একটু হলেও আলাদা। কারণ করিম এসেছে। সেই এখন বনকর্মীদের চোখ কান। অন্তত তেমনই জানাচ্ছেন বন দফতরের কর্মীরা।

Advertisement

সম্প্রতি চোরাশিকারিদের ফেলে যাওয়া ব্যাগে মাংসের গন্ধ শুঁকে বাইসনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে করিম। মাত্র মাত্র মাসখানেক হল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে কাজে যোগ দিয়েছে সে। তার মধ্যেই হয়ে উঠেছে সকলের চোখের মনি। করিম বেলজিয়াম শেপার্ড প্রজাতির স্নিফার ডগ। গ্বালিয়রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে তাকে। বনকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন সেই এখন তাঁদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়।

সম্প্রতি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পানা জঙ্গলে বনকর্মীরা কয়েকজনকে তাড়া করলে তারা ব্যাগ ফেলে পালায়। সেই ব্যাগে মাংসের সন্ধান পাওয়া যায়। ডাক পরে করিমের। মাংসের গন্ধ শুঁকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে আদমার জঙ্গলে বনকর্মীদের নিয়ে যায় করিম। সেখানে বাইসনের দেহ মেলে।

Advertisement

বনকর্তারা বলছেন, ‘‘বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধে সাফল্য মিলেছে ‘স্নিফার ডগ’ ব্যবহারে।’’ বছর খানেক আগে আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন চাপাতালি গ্রামে দিনের বেলায় একটি চিতাবাঘ ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসী আতঙ্কে সেটিকে পিটিয়ে মারে। পরে প্রাণীটির দেহের একটি অংশ উদ্ধার হয়। জলদাপাড়ার একটি ‘স্নিফার ডগ’ই সেটি উদ্ধার করে। এর আগেও নিমতির জঙ্গলে হাতি মেরে দাঁত কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এসএসবির ‘স্নিফার ডগ’ এনে তদন্ত সাফল্য মিলেছিল। এ বার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিজস্ব স্নিফার ডগ থাকায় বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত ঘটনার দ্রুত তদন্ত করা সম্ভব বলে আশ্বাস বনকর্মীদের। কিছুদিন আগে রাজাভাত খাওয়া জঙ্গলেও চোরাশিকারিদের একটি গাদা বন্দুক উদ্ধারে সাহায্য করেছ করিম।

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি কল্যাণ রাই জানান, ‘‘পানা তিন কম্পার্টমেন্টে কিছু সন্দেহভাজনকে দেখে থামতে বলেন বনকর্মীরা। তারা কর্মীদের দিকে তেড়ে এলে, বনকর্মীরা শূন্যে গুলি চালান।’’ তারপরেই ওই ব্যাগ ফেলে পালায় সন্দেহভাজনরা।

কল্যাণ রাই বলেন, “প্রতিদিন জঙ্গলে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার এলাকায় টহল দিচ্ছে করিম। তা ছাড়া করিমের ট্রেনাররা বিভিন্ন বন্যজন্তুর দেহাংশ খুঁজে বের করার জন্য নিয়মিত জঙ্গলে তাকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন