প্রতীকী ছবি।
দ্বন্দ্বমূলক তৃণমূলবাদ? কোচবিহার তৃণমূলের নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে এখন এমন মন্তব্যই করছেন অনেকে। সেই দলে রয়েছেন দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশও। কিন্তু তাতেও ‘দ্বন্দ্ব’ থামার লক্ষণ নেই শাসকদলে। এ বারে তুফানগঞ্জে ডাকা বিশেষ কর্মিসভার ক্ষেত্রে দেখা গেল, প্রচারের ব্যানারে রাখাই হয়নি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নাম রাখা হয়নি। আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। অথচ প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ এখন দলের রাজ্য সহ-সভাপতি। আজ রবিবার তুফানগঞ্জের কমিউনিটি হলে ওই কর্মিসভা হবে। তুফানগঞ্জ শহর ব্লক, তুফানগঞ্জ ব্লক ১(এ), ১(বি) ও ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের যৌথ উদ্যোগে ওই কর্মিসভার ডাক দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি খাদ্য আন্দোলনের শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো নিয়েও রবীন্দ্রনাথ ও পার্থপ্রতিম আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করেন। তাই নিয়ে দলের মধ্যেই ক্ষোভ তৈরি হয়। এর পর ব্যানার কেলেঙ্কারি। ব্যানারে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের অন্যতম জেলা সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ। তিনি বলেন, “রবিবাবুর বৈঠকে পার্থকে ডাক পান না। পার্থ আবার রবিবাবুকে ডাকেন না। এমন কোনও অভিযোগই কাম্য নয়। দলের স্বার্থে সবার একসঙ্গে চলা উচিত।” রবীন্দ্রনাথ বলেন, “জেলা সভাপতি কোনও মিটিং বা কর্মসূচিতেই ডাকেন না।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরে কথা বলা ঠিক নয়। যা বলার দলের ভিতরেই বলব।”
কর্মিসভায় আমন্ত্রণ জানানো নিয়েও দলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে। কর্মিসভার প্রচার ব্যানারে নাম রাখা হলেও তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ শনিবার বিকেলে বলেন, “আমি এখনও ওই বিষয়টি জানি না। তা ছাড়া আগাম অন্য কর্মসূচি ঠিক থাকায় তুফানগঞ্জে থাকতেও পারব না।” দলের আর এক নেতা অর্ঘ্য রায় প্রধান শনিবার বিকেলে বলেন, “এখনও পর্যন্ত ওই কর্মিসভার ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানাননি।” অর্ঘ্য তুফানগঞ্জ বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক। গত ভোটে তুফানগঞ্জে লড়াই করা তৃণমূল প্রার্থী মানিক দে’র নামও অবশ্য ব্যানারে নেই। তৃণমূলের অন্যতম জেলা সম্পাদক খোকন মিঁয়া বলেন, “কোচবিহারে জেলা সভাপতি লিমিটেড চলছে। রবীন্দ্রনাথ ডানপন্থী আন্দোলনের মুখ। তার নাম ব্যানারে থাকবে না কেন?”
রাজনৈতিক মহলের একাংশে চর্চা, জেলা তৃণমূল এখন দুই শিবিরে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত। রবির সঙ্গে বিনয়, অর্ঘ্য, সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়ারা রয়েছেন। জেলা সভাপতির সঙ্গে উদয়ন, পরেশ, জলিল প্রমুখ রয়েছেন। দলের এক নেতার অবশ্য দাবি, ‘‘এ সব মনগড়া। দলে এমন কোনও বিভাজন নেই।’’