রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ পিকেট। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বন্দুকধারী পুলিশের সংখ্যা। ওয়াচটাওয়ার থেকে নজরদারিতে কোনও ফাঁক নেই। ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশনেও রাখা হচ্ছে নজর। অসম থেকে কোচবিহারে আশা ছোট-বড় সব গাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অসমের তিনসুকিয়ায় ৫ জন বাঙালি যুবককে গুলি করে খুন করার পরে নিরাপত্তায় কড়াকড়ি করা হয়েছে কোচবিহারে। অসম সীমান্ত তো বটেই জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড-ট্রেন স্টেশনেও নজর রাখছে পুলিশ। সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে একাধিক জায়গায়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অসম সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত গাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”
দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহার সফরে এসেছিলেন। সেই সময় তিনি অসমে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বাঙালিদের এভাবে বিতাড়নের চেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দেন তিনি। স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, বাঙালি-বিহারি থেকে যে কেউ আশ্রয়হীন হয়ে পড়লে বাংলা আশ্রয় দেবে। সেই সঙ্গে অসম ও বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদাড়ি ও তল্লাশি বাড়ানোর নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে থাকার সময়ই ৫ জন বাঙালিকে গুলি করে খুনের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। সেই পরিস্থিতির আঁচ কিভাবে কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায় পড়বে তা নিয়ে সতর্ক হয়ে পড়েন সকলে। পুলিশ সূত্রের খবর, রাতেো তুফানগঞ্জের বক্সিরহাট এলাকার অসম সীমান্তে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তল্লাশির সঙ্গে সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় যাতে কোনওরকম উত্তেজনা না ছড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রা রাখা হয়।
এদিন সকাল থেকেই বক্সিরহাট লাগোয়া শ্রীরামপুরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে পথ অবরোধ শুরু করে বাঙালি জনমুক্তি বাহিনী। প্রায় ১১ টা পর্য়ন্ত ওই অবরোধ চলে। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে একাধিক ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও সংকোশে একটি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করেছে রাজ্য পুলিশ। সেখান থেকেও নজর রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। ওপাশ থেকে কেউ এপারে এলে তাঁদের কি ব্যবস্থা করা হবে তা নিয়ে প্রাথমিক ভাবে আলোচনাও সেরে নেওয়া হয়েছে।