•নজরহীন: নিরাপত্তা শিকেয়। ক্যাম্পাসের মধ্যে রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
বারবার বলার পরেও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো বা সীমানা পাঁচিল দিয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ আটকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ক্যাম্পাসের মধ্যে একাধিক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনার পরেও কেন কর্তৃপক্ষ উদাসীন, তা নিয়ে অভিযোগ রয়েইছে। ক্ষোভও জমছিল পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী মহলে। বুধবার শ্রাবন্তী বসাকের কথায় সেই জমে থাকা বাষ্পরই কিছুটা বেরিয়ে এল।
রাজ্য শিশু বিকাশ, মহিলা ও সমাজ কল্যাণ দফতরের সচিব রোশনি সেনের সামনে তিনি এই নিয়ে মুখ খোলায় অনেকেই তারিফ করছেন। সেই সঙ্গে নিজেদের আত্মরক্ষার বিষয়টি ছাত্রীরাই যাতে করতে পারে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জিও জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির তরফে জানানো হয়, ওই ছাত্রী যা বলেছেন সেটাই বাস্তব। সম্প্রতি ক্যাম্পাসের মধ্যে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির একাধিক ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো, নিরাপত্তার দিকটি সুনিশ্চিত করা তো কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তরফেও ছাত্রীর বক্তব্য সমর্থন করে জানানো হয়েছে, এই প্রশ্ন সকলেরই। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাস লাগোয়া মেসে একটি ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাকে এক জন বহিরাগত উত্যক্ত করত বলে জানা গিয়েছে। সমিতির আহ্বায়ক গুরুচরণ রায় বলেন, ‘‘আমরা শ্রাবন্তীকে সমর্থন করছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত নিরাপত্তার বিষয়টি সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং অবিলম্বে এই নিয়ে ব্যবস্থা করা।’’
পড়ুয়া, বিশেষ করে হস্টেলের ছাত্রীরাও শ্রাবন্তীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের অনেকেই জানান, ‘‘আমরা যেটা বলতে চাইছিলাম, সেটাই সঠিক ভাবে তুলে ধরেছে শ্রাবন্তী। মেয়েরাই যাতে নিজেরাই আত্মরক্ষা করতে পারে, তার উপরে জোর দিয়েছেন রোশনি সেনও।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ স্কলার সংগঠনের তরফেও শ্রাবন্তীর প্রশংসা করা হয়।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময়ই চান মেয়েরা সব দিক থেকে স্বনির্ভর হোক। নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করুক। এই ব্যাপারটিকে সরকারও গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। কিন্তু ছাত্রীরা নিজেরাই যদি আত্মরক্ষা করতে পারে, তার চেয়ে ভাল কিছু হয় না।’’