আবেদন-আর্জিতে কাজ হয়নি, পাহাড়ের রেশন দোকান খুলতে এ বার কড়া পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং জেলা খাদ্য নিয়ামকের দফতর থেকে পাহাড়ের সব রেশন ডিলারদের একটি নোটিস ধরানো হয়েছে। নোটিসে বলা হয়েছে জনস্বার্থে ডিলার অফিস খুলে খাদ্য শস্য বিলি শুরু করতে হবে। কোনও ডিলার যদি অফিস না খোলে তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দফতর সূত্রে খবর, প্রয়োজনে ওই ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার ভাবনাচিন্তাও হচ্ছে। লাগাতার বন্ধ শুরুর আগে থেকে যখন পাহাড়ে শুধু সরকারি অফিস বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল তখন থেকে পাহাড়ের রেশন ডিলার অফিসগুলি বন্ধ। সে হিসেবে গত ২৪ দিন ধরে পাহাড়ে রেশন বিলি বন্ধ রয়েছে। রাজ্যের এক মন্ত্রীর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার এই পরিস্থিতিতে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না।’’
খাদ্য দফতরের কড়া বার্তার নেপথ্যে প্রশাসনিক কারণ রয়েছে। জেলাশাসক সহ অন্য সরকারি অফিসের তুলনায় স্বাস্থ্য এবং খাদ্যের মতো দফতরের সঙ্গে সাধারণ বাসিন্দাদের যোগাযোগ বেশি। আগের বন্ধে মন্ত্রীরা পাহাড়ে গিয়ে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিলেন পাহাড়ে। সে কারণে বন্ধ শুরুর আগে থেকেই বিক্ষোভকারীরা সচেতন ভাবে খাদ্য দফতরের সব রেশন অফিস বন্ধ করে দেয় এবং সরকারি খাদ্য সামগ্রী সমতল থেকে উঠতেও বাধা দিতে শুরু করে। সে কারণে আন্দোলনে পাহাড়ে রাজ্যের ‘প্রশাসনিক উপস্থিতি’ বোঝাতে রেশন ডিলার অফিস খোলা রাখা অন্যতম প্রশাসনিক কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। ডিলার অফিস খোলা রাখায় ভাঙচুর হলে তার ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে ডিলারদের।
খাদ্য দফতর জানাচ্ছে ডিলারের ঘরে ইতিমধ্যেই আনাজ মজুত রয়েছে। যে দিন থেকে অফিস বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল, সে দিনের হিসেবে এক পক্ষকালের রেশন সামগ্রী পাহাড়ে রয়েছে। তা ছাড়া রমজান মাস উপলক্ষ্যে জুন মাসে অতিরিক্ত তেল, আটা, ছোলা, ময়দাও পাঠানো হয়েছিল। দার্জিলিং জেলা খাদ্য নিয়ামক মানিক সরকার বলেন, ‘‘খাদ্য সামগ্রী ডিলারের কাছেই রয়েছে। সকলকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যে করেই হোক বণ্টন চালু করতেই হবে।’’ প্রায় ন’লক্ষ বাসিন্দার জন্য ৯ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য প্রতি মাসে পাহাড়ে পাঠায় খাদ্য দফতর।