BJP

‘মাটির মানুষ’ বিধায়কের মৃত্যুতে আজ বন্‌ধের ডাক উত্তরে

কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার পড়শি হেমতাবাদ কেন্দ্র। কালিয়াগঞ্জের মতো এখানেও রাজবংশী ভোট গুরুত্বপূর্ণ, ৩০-৩৫ শতাংশ।

Advertisement

গৌর আচার্য

হেমতাবাদ শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৫
Share:

পাশে: দেবেন্দ্রনাথের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

তিন বছরের ব্যবধান। তাতেই হাওয়া ঘুরে গিয়েছিল হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের। সিপিএমের জেতা আসনে এগিয়ে যায় বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ফল বার হওয়ার ক’দিনের মধ্যে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়। দিনটা ছিল ২৮ মে। তার পরেই সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করে।

Advertisement

কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার পড়শি হেমতাবাদ কেন্দ্র। কালিয়াগঞ্জের মতো এখানেও রাজবংশী ভোট গুরুত্বপূর্ণ, ৩০-৩৫ শতাংশ। দেবেনবাবু ছিলেন রাজবংশী নেতা। স্থানীয়দের কথায়, দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল স্তরের লোকজনের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগ। ২০১৬ নির্বাচনে তৃণমূলের সবিতা ক্ষেত্রীকে ১০ হাজার ভোটে হারান তিনি। ২০১৯ সালে কিন্তু এখানে সাড়ে ছ’হাজারের মতো লিড নিয়েছিল বিজেপি। এই পরিবর্তিত রাজনৈতিক চিত্রই দেবেনবাবুর মধ্যে দল বদলের তাগিদ তৈরি করেছিল কিনা, তা অবশ্য তিনি স্পষ্ট করে কখনও বলেননি। তবে তাঁর দল পরিবর্তনের কয়েক মাসের মধ্যে আবার পটবদল দেখা যায় এলাকায়। পড়শি কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা, যেখানে ২০১৯ সালে প্রায় ৫৭ হাজার ভোটের লিড নিয়েছিল বিজেপি, সেখানে উপনির্বাচনে জয়ী হয় তৃণমূল। অসমে এনআরসি চালু হওয়ার পরে ওই এলাকার রাজবংশী ভোট বিজেপির বিরুদ্ধে চলে যায় বলে দাবি তৃণমূলের একাংশের।

তার পরেও অবশ্য নিজের এলাকায় মাটি কামড়ে পড়ে থেকে জনসংযোগ বজায় রেখেই চলছিলেন দেবেনবাবু। অনেকেই এখন মনে করেন, করোনা আবহে এনআরসি তত বড় বিষয় আর না-ও হতে পারে। ফলে আগামী বিধানসভা ভোটে দেবেনবাবু জনসংযোগের ফসল তুলতেন বলেই তাঁর দলেরও দাবি। বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, ‘‘দেবেনবাবু গত তিন দশক ধরে হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে রাজবংশী সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের স্বার্থে লড়াই করে চলেছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দেবেনবাবুকে হারানো সম্ভব নয়, তা বুঝতে পেরে তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে তাঁকে খুন করেছে।’’

Advertisement

খুনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর প্রফুল্ল বর্মণের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল খুনের রাজনীতি করে না। বিজেপির অন্দরে কোনও গোলমালের জেরে দেবেনবাবুর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হোক।’’ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, ‘‘রাজ্য পালাবদলের পর হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রথমে তৃণমূল, পরে বিজেপি নানা প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের নেতা, কর্মীদের নিজেদের দলে টেনেছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই দেবেনবাবুর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন