ভোল বদলে ছাত্র টানে স্কুল

এক-দেড় বছর আগেও স্কুলের বারান্দা ছিল এলাকার বাসিন্দাদের গরু-ছাগল রাখার আস্তানা। রাতভর থাকা ওই গবাদি পশুদের মল-মূত্রে একেবারে পুতিগন্ধময় পরিবেশ হয়ে থাকত গোটা স্কুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০২:২৮
Share:

রূপান্তর:আগে এমনই ছিল স্কুলের বারান্দা। নিজস্ব চিত্র

এক-দেড় বছর আগেও স্কুলের বারান্দা ছিল এলাকার বাসিন্দাদের গরু-ছাগল রাখার আস্তানা। রাতভর থাকা ওই গবাদি পশুদের মল-মূত্রে একেবারে পুতিগন্ধময় পরিবেশ হয়ে থাকত গোটা স্কুল। স্কুলে খাতায়-কলমে একশোর বেশি পড়ুয়া থাকলেও ৪০ শতাংশের বেশি কোনও দিনই ছাত্রছাত্রীরা হাজির হতো না। ধুঁকছিল ইংরেজবাজার ব্লকের কোতোয়ালির দৈবকীপুর প্রাইমারি স্কুল।

Advertisement

বছর খানেক আগে মালদহ জেলার আরও আটটি প্রাইমারি স্কুলের সঙ্গে এই স্কুলটিকেও পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে স্কুল উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। তাতেই একেবারে ভোল বদলে গিয়েছে দৈবকীপুর প্রাইমারি স্কুলের। আসপাশের বাসিন্দারা ও অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে তারপরে স্কুলকে আপাদমস্তক বদলে ফেলেছেন শিক্ষকরা।

স্কুলের মেন্টেন্যান্স গ্রান্টের কিছু অর্থের সঙ্গে ওই বাসিন্দারাই কেউ নিজেরা ইট বা কেউ সিমেন্ট বা শ্রম দিয়ে তৈরি করেছেন স্কুলের পাকা সীমানা প্রাচীর। সেই প্রাচীর জুড়ে এখন শিক্ষামূলক নানা ছবি। স্কুলে ফুল ও বাহারি পাতার বাগান করা হয়েছে। স্কুলের সামনের রাস্তা ও চত্বর এখন প্রতিদিন গ্রামবাসীরাই পালা করে ঝাঁট দিয়ে দেন। আর সবচেয়ে বড় কথা, হাজিরাও এখন ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ শতাংশে।

Advertisement

এখন স্কুল পরিচ্ছন্ন। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পীযূষকান্তি চৌধুরী বলেন, ‘‘আরও উন্নয়ন কী ভাবে করা যাবে, তা নিয়ে অভিভাবক ও গ্রামবাসীরাই এখন স্কুলে সভা করে পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা রূপায়ণে কোনও সরকারি দফতর থেকে অর্থ আসতে পারে সেটাও তাঁরা ঠিক করছেন।’’ স্কুলের মিড ডে মিল বা পঠন-পাঠন কেমন চলে সে সবের নজরদারিও করেন তাঁরা। স্কুলের পড়ুয়া এখন ১১৩ জন এবং হাজিরা প্রতিদিনই ৯০ শতাংশ থাকছে। পড়ুয়াদের শিক্ষার মানও বেড়েছে অনেক।

স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে জেলার ৯টি স্কুলে স্কুল উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রকল্প সফল হওয়ায় এ বার জেলার আরও ৬০টি প্রাইমারি স্কুলকে ভোল বদলাতে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা পরিকল্পনা সমন্বয়ক অঞ্জন মিশ্র বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই ৬০টি স্কুলকে বদলে ফেলতে চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement