নাগরাকাটা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন শুক্রা মুন্ডা। তফশিলী উপজাতিদের জন্যে সংরক্ষিত এই নাগরাকাটা কেন্দ্রে তফশিলী উপজাতি এবং আদিবাসী ভোটার ৭০ শতাংশেরও বেশি। কিন্তু নাগরাকাটার গাঠিয়া চা বাগানের বাসিন্দা শুক্রা মুন্ডার আদিবাসী সমাজে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রার্থী হওয়ার পর থেকে প্রশ্নচিহ্ন উঠতে শুরু হয়ে গিয়েছে।
একসময় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের চা শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন শুক্রা। এরপর জনের হাত ধরে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। এ কারনে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ থেকে সাসপেন্ড হন তিনি। ২০১২ তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নাগরাকাটায় সভা করে সোজা গাঠিয়া চা বাগানে শুক্রা মুন্ডার বাড়িতে চলে যান। সেই থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে শুক্রার। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দিকে ঝুঁকে থাকা জনের হাত ছেড়ে বেরিয়ে এরপর তৃণমূলেই যোগ দেন তিনি। একদিকে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ থেকে সাসপেন্ড অন্যদিকে জনের সঙ্গত্যাগ সবমিলিয়ে ডুয়ার্সের আদিবাসীদের দুই গোষ্ঠীর সঙ্গেই বিচ্ছেদের জেরে নাগরাকাটায় আদিবাসীদের সমর্থন কতটা পাবেন শুক্রা তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য কমিটির নেতা পরিমল লগুনের কথায়, ‘‘শুক্রাকে আমরা সাসপেন্ড করেছিলাম, তাই আদিবাসী ভোটারের কাছে ওর গ্রহণযোগ্যতাই নেই। ওকে প্রার্থী করার আগে এটা ভাবা উচিত ছিল তৃণমূলের।’’ জন বারলা নিজেও এবার প্রার্থী হচ্ছেন। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা জনকে সমর্থন করে রেখেছে। তবে বিজেপি না ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা কিসের প্রতীকে লড়বেন জন, তা চূড়ান্ত হয়নি এখনও। শুক্রাকে প্রার্থী করায় জনের বক্তব্য, ‘‘যে নিজে বারবার দল, সংগঠন পাল্টে ফেলে তাকে মানুষ কীভাবে বিশ্বাস করবে? আদিবাসীরা এখন যথেষ্ট সচেতন তাই শুক্রাকে ওরা ভোট দেবে না।’’ আর শুক্রার কথায়, ‘‘জন কোনও ফ্যাক্টরই নয়, আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সমর্থন পেলে ভাল কিন্তু মানুষের সমর্থনই হল আসল সমর্থন।’’
এদিকে মালবাজার এবং নাগরাকাটায় মন মতোও প্রার্থী না হওয়ায় বিভ্রান্ত আদিবাসী বিকাশ পরিষদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে আজ রবিবার মালবাজারে বৈঠকে বসছেন আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য নেতৃত্ব। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকেও। বৈঠকের পরই আদিবাসী বিকাশ পরিষদ তাদের অবস্থান স্পষ্ট করবে বলেই সূত্রের খবর।