Tea Production

উৎপাদনে ঘাটতি, চায়ের জোগানে সঙ্কট

সাধারণত এখন যে চা উৎপাদন হচ্ছে, কয়েকটি ভাল বাগান ছাড়া সেগুলি এখনও বাজারে আসেনি। সেই কারণে বাগানের সঙ্কট এখনও ঘরে ঘরে পৌঁছয়নি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৩ ০৯:২৫
Share:

জলপাইগুড়ির একটি চা বাগান। — নিজস্ব চিত্র।

পেয়ালায় ছায়া ফেলেছে সঙ্কট। গত মে মাসে রাজ্যে চায়ের উৎপাদন ঘাটতি অন্তত ৬০ লক্ষ কেজি। বাজারের নিয়মে উৎপাদনে ঘাটতিতে জোগানে সঙ্কট তৈরি হলে দাম বাড়ে। যদিও কলকাতা ও শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে গত বছরের তুলনায় পাতার দাম কম মিলছে। এর কারণ অবশ্য পাতার গুণমান। এ বছরের পাতার গুণমান যে অনেকটাই খারাপ, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন চা উৎপাদকেরা। বছরের শুরু থেকেই আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনাকে দুষছেন চা বাগান পরিচালক থেকে শ্রমিকেরা। আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন মার খাচ্ছে বলে একাধিক বাগান কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের প্রথম ফ্লাশের সময় থেকেই দাবি করে আসছিলেন। চা পর্ষদের প্রকাশিত তথ্যও সেই আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করে নজিরবিহীন ঘাটতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

Advertisement

চা পর্ষদের প্রকাশিত রিপোর্টে গত মে মাসে ঘাটতি সব চেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত মে মাসে রাজ্যে প্রায় ৩২০ লক্ষ কেজি চা পাতার উৎপাদন হয়েছে। অথচ গত বছর মে মাসে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩৮০ লক্ষ কেজিরও বেশি। এ বছরের মতো এত উৎপাদন ঘাটতি সাম্প্রতিক সময়ে হয়নি বলে দাবি। করোনা-আবহের কয়েক বছরেও এমন সঙ্কটের মুখোমুখি হতে হয়নি বলে দাবি চা বাগান পরিচালকদের। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, ‘‘চা পাতার কম উৎপাদন উদ্বেগের বিষয়। তার চেয়েও বড় উদ্বেগ— পাতার কম দাম। এর কারণ পাতার গুণমান। আবহাওয়ার কারণে আমাদের এ বছর বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’

সাধারণত এখন যে চা উৎপাদন হচ্ছে, কয়েকটি ভাল বাগান ছাড়া সেগুলি এখনও বাজারে আসেনি। সেই কারণে বাগানের সঙ্কট এখনও ঘরে ঘরে পৌঁছয়নি। যখন এই চা প্যাকেটবন্দি হয়ে গৃহস্থের ঘরে বা দোকানে পৌঁছবে, তখন সেই পাতার স্বাদ বা রং টের পাবেন চা-প্রেমীরা, এমনই মনে করা হচ্ছে। ডুয়ার্স ও তরাইয়ের চা বাগানে গত কয়েক মাসে উৎপাদন মার খেয়েছে। গত এপ্রিল মাসে রাজ্যে চা উৎপাদন হয়েছে ২৩০ লক্ষ কেজির কিছুটা বেশি, যেখানে গত বছর এপ্রিলে উৎপাদন ২৬০ লক্ষ কেজি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এ বছর শুরু থেকেই টানা রোদ ছিল। বৃষ্টি না পাওয়ায় রোদে ঝলসে গিয়েছিল প্রথম ফ্লাশের কচি পাতা। তার পরে শুরু অতিবৃষ্টি, যার জেরে পাতার বড় হওয়া থমকে গিয়েছে। ছোট চা বাগান মালিকদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চা বাগানে এখন খুবই খারাপ সময়। প্রচুর কারখানা বন্ধ হয়ে রয়েছে। আমরা পাতা বিক্রি করতে পারছি না কম দামের কারণে।’’

Advertisement

চা প্রেমীদের অনেকের বক্তব্য, স্বাদে-গন্ধে প্রথম ফ্লাশের চায়ের তুলনা চলে না। দ্বিতীয় ফ্লাশের চায়ের রং ঘন এবং তার কড়া স্বাদের আমেজ সব মরসুমকে টেক্কা দেয়। এ বছরের চা পাতা সেই স্বাদ-গন্ধ-রঙের কতটুকু দিতে পারবে, তা নিয়েই উদ্বেগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন