তৃণমূলী ঘেরাওয়ে অশোক

চার দিন ধরে শহরে পানীয় জল সরবরাহ না থাকায় শিলিগুড়ি শহরের জনজীবন এমনিতেই কিছুটা বিপর্যস্ত। তার উপরে সোমবার জলের দাবিতে দিনভর কয়েক দফায় বিক্ষোভ, ঘেরাও, পাল্টা প্রতিবাদ মিছিলের জেরে আরও নাজেহাল হলেন শিলিগুড়িবাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৫
Share:

পুরসভার বাইরে অশোককে ঘিরে তৃণমূলের বিক্ষোভ। সোমবার শিলিগুড়িতে। ছবি:বিশ্বরূপ বসাক।

চার দিন ধরে শহরে পানীয় জল সরবরাহ না থাকায় শিলিগুড়ি শহরের জনজীবন এমনিতেই কিছুটা বিপর্যস্ত। তার উপরে সোমবার জলের দাবিতে দিনভর কয়েক দফায় বিক্ষোভ, ঘেরাও, পাল্টা প্রতিবাদ মিছিলের জেরে আরও নাজেহাল হলেন শিলিগুড়িবাসী। বেলা ১১টা থেকে ১টা অবধি মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের কাউন্সিলর, নেতা-কর্মীরা। মেয়র পুরসভা চত্বরে ঢুকলেও ঘেরাওয়ের জন্য অফিসে যেতে পারেনি।

Advertisement

ওই সময়ে পুরসভা লাগোয়া রাস্তায় যানজট হয়ে যায়। সেই জট ছড়িয়ে পড়ে কোর্ট মোড়-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। কিছুক্ষণ পরে এই বিক্ষোভের প্রতিবাদে আবার হাসমি চকে অবরোধ করে এসএফআই। ফলে গোটা শহরই থমকে যায়। অবস্থা সামাল দিতে বেলা গড়িয়ে যায়।

বেলা ৩টে নাগাদ শহরের যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। বিকেল চারটের পরে মিত্র সম্মিলনী হলে তৃণমূলের দলীয় অনুষ্ঠান ছিল। পর্যটনমন্ত্রীর গাড়ি মিত্র সম্মিলনীর সরু গলির মুখে রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকায় নতুন করে জট তৈরি হয় সেই রাস্তায়। ওই গাড়ি না সরিয়ে পুলিশ তখন যানচালকদের ওই পথ ব্যবহার করতে নিষেধ করে। তাতে মানুষের ক্ষোভ বেড়ে যায়। তখন তৃণমূলেরই এক যুব নেতা মন্ত্রীর গাড়ির চালককে ডেকে বলেন, এই গাড়ির জন্য জট তৈরি হওয়ায় দলেরই ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এই কথায় চালকের হুঁশ ফেরে। দল সূত্রের খবর, মন্ত্রীও পরে চালককে ভর্ৎসনা করেছেন।

Advertisement

এ দিন সকাল থেকেই পুরসভা চত্বরে হট্টগোল বাঁধে। প্রথম থেকেই পুরসভায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূল কাউন্সিলর ও নেতারা। বেলা ১১টা নাগাদ মেয়র পুরসভায় এলে তাঁর গাড়ি ঘিরে সেই বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা বিক্ষোভ চললেও পুলিশ তা হটানোর চেষ্টা করেনি বলে অভিযোগ। পুরসভার সামনের রাস্তা কোর্ট মোড় তত ক্ষণে জটে বিপর্যস্ত। মেয়রকে হেনস্থার প্রতিবাদে এবং জন স্বাস্থ্য এবং কারিগরী দফতরের জন্য জল সরবরাহের সমস্যা হচ্ছে দাবি করে হাসমি চকে পাল্টা অবরোধ শুরু করে এসএফআই। যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে হিলকার্ট রোড়েও। ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো জল সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়া নিয়ে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি ঠিক হয়।

মেয়র বলেন, ‘‘গাড়ি আটকে উপরে উঠে যা তৃণমূল করল তা ঠিক নয়। জেনে রাখুন, বন্দুকের নল ঠেকিয়ে বললেও পদত্যাগ করছি না।’’

ফুলবাড়ি এলাকায় রাস্তা চওড়া করে এশিয়ান হাইওয়ের কাজের জন্য জলের লাইন সরানো হচ্ছে। কাজ করছে জন স্বাস্থ্য এবং কারিগরী দফতর। পুরসভাকে তারা ২ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়ে কাজের জন্য অনুমতি চায়। কাজের জন্য ৮-৯ সেপ্টেম্বর জল সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয়। কিন্তু শনিবার বিকেলে জল চালু করার কথা থাকলেও পাইপ ফেটে গেলে রবিবারেও তা বন্ধই থাকে। এ দিন ৩, ৪, ৬, ১৭, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু অংশে জল আসে। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘মেরামতির জন্য কিছু সময় জল সরবরাহ মাঝেমধ্যে বন্ধ হয়। কিন্তু, সঙ্কট মোকাবিলার জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন মেয়র। তাই শিলিগুড়িবাসীর কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন