অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারা

নির্যাতিতার বাড়িতে ‘নজরদারি’

বাড়ি ঘিরে চলছে নজরদারি। অপরিচিত কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেখলেই মোটরবাইক নিয়ে বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করছেন কয়েকজন। গ্রামে পুলিশ ঢুকলেও দূর থেকে নজর রাখা হচ্ছে। পুলিশ ফিরে যাওয়ার পরেই বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন তৃণমূল নেতাদের কয়েকজন। শিখিয়ে দেওয়া মতোই তাঁরা বলেছেন কি না তা জেনেই ফিরছেন তাঁরা। কোচবিহারের ঘোকসাডাঙা থানার রুইডাঙ্গার রামঠ্যাঙা গ্রামে নির্যাতিতার বাড়ি ঘিরে তৃণমূল নেতাদের এমনই নজরদারি চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:১৫
Share:

ধৃত পরিমল বর্মন। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ি ঘিরে চলছে নজরদারি। অপরিচিত কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেখলেই মোটরবাইক নিয়ে বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করছেন কয়েকজন। গ্রামে পুলিশ ঢুকলেও দূর থেকে নজর রাখা হচ্ছে। পুলিশ ফিরে যাওয়ার পরেই বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন তৃণমূল নেতাদের কয়েকজন। শিখিয়ে দেওয়া মতোই তাঁরা বলেছেন কি না তা জেনেই ফিরছেন তাঁরা। কোচবিহারের ঘোকসাডাঙা থানার রুইডাঙ্গার রামঠ্যাঙা গ্রামে নির্যাতিতার বাড়ি ঘিরে তৃণমূল নেতাদের এমনই নজরদারি চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

অভিযোগ, নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার কোনও ভাবেই যাতে সত্য কথা না বলতে পারেন সে জন্যই ‘ছক কষে’ এমনটা করা হচ্ছে। ওই ছকের পিছনে খোদ বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের হাত রয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। ওই পরিবারের উপর যে চাপ রয়েছে তা সরাসরি না হলেও আড়ালে আবডালে স্বীকার করছেন জেলা পুলিশের কর্তারাও।

ওই পরিবারের তরফ থেকে অবশ্য কেউ কিছু বলছেন না। নির্যাতিতার স্বামীর একটাই বক্তব্য, তাঁরা ওই অভিযোগ থেকে সরে আসতে চান। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নারায়ণ সরকারের অভিযোগ, “ওঁদের বাড়ি নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে। তৃণমূলের বাহিনী চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা অবস্থা তাতে ভয় পেয়ে ওই পরিবার অভিযোগ তুলে নেওয়ার কথা বলছেন। বনমন্ত্রীর নির্দেশেই এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছি।” তিনি দাবি করেন, যে তৃণমূল নেতারা সালিশি সভায় ডেকে ধর্ষিতা ও তাঁর পরিবারের উপরে চাপ তৈরি করেছেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ দিন মাথাভাঙা-২ নম্বর জোনাল কমিটির বৈঠকে তাঁরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং শাস্তির দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

তৃণমূল নেতারা অবশ্য সিপিএমের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁদের দাবি, রাজনীতি করার জন্য সিপিএম নেতারা এমন কথা বলছেন। বনমন্ত্রী বলেন, “রাজনীতির ফায়দা নেওয়ার জন্য এমন অভিযোগ করছে সিপিএম। কোনও অন্যায় কাজকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। ওই ঘটনার মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তাতে যার নামই উঠে আসুক না কেন পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”

গত ৩ মে রামঠ্যাঙায় তৃণমূল সমর্থক পরিমল বর্মনের বিরুদ্ধে ওই প্রতিবেশী ওই বধূকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ৬ মে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ওই বধূ থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তাঁদের ফিরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ সুপারের অফিসে গিয়ে তাঁরা অভিযোগ জানান। গত সোমবার গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে ধর্ষিতা ও তাঁর পরিবারের উপরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য দীনেশ বর্মন, অনুকূল বর্মন-সহ কয়েকজন অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করেন। বুধবার বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় পুলিশ ধর্ষণের মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সুপার জানান, নির্যাতিতাকে থানা থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন