অসতর্ক: খালি হাতেই হচ্ছে মিষ্টি। তাতে জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে। —নিজস্ব চিত্র।
চমচম থেকে রসকদম্ব। রসগোল্লা থেকে শুরু করে মতিচুরের লাড্ডু। এমনই সুস্বাদু মিষ্টি কোথাও তৈরি হচ্ছে রাস্তার ধারে। কোথাও আবার নর্দমার উপরেই।
শহর হোক কিংবা গ্রাম। মালদহের সর্বত্রই এমনই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরি চলছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, শুধু অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই নয়, গ্লাভস ছাড়াই চলছে মিষ্টি তৈরি। সেই সঙ্গে মিষ্টি দেওয়ার ক্ষেত্রেও চিমটে কিংবা চামচ দোকানগুলিতে ব্যবহার করা হয় না।
এর জন্য পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারিকেই দোষ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। স্কুল শিক্ষক অভিজ্ঞান সেনগুপ্ত বলেন, “রসগোল্লা জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা উচ্ছ্বসিত। তবে শহরে বিভিন্ন স্থানে দেখা যাচ্ছে রাস্তার ধারেই চলছে মিষ্টি তৈরি। মিষ্টির সঙ্গে মিশছে ধুলো। অথচ সেই বিষয়ে নজরদারি চালাতে কারও কোনও হেলদোল নেই।” ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, “বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। খুব শীঘ্রই আমরা অভিযান চালাব দোকানগুলিতে।”
শহরের গৌড় রোড এলাকায় নার্সিংহোমের পাশেই একটি মিষ্টির দোকানে রাস্তার ধারেই বেঞ্চ পেতে মিষ্টি তৈরি করছেন কর্মীরা। সেই রাস্তা দিয়ে মোটরবাইক থেকে শুরু করে ছোট গাড়িও চলাচল করে। একই অবস্থা বিনয় সরকার মূর্তি সংলগ্ন একটি মিষ্টির দোকানেও। সেখানে নর্দমার উপরেই চলে মিষ্টি তৈরি। এমনই দৃশ্য দেখা যায় পুরাতন মালদহের সাহাপুর সেতু মোড়েও। সেখানে রাজ্য সড়কের ধারে সবসময়ই মিষ্টি তৈরি করেন কর্মীরা। জায়গাগুলোও অপরিচ্ছন্ন। সাফাই না হওয়ায় মশা, মাছি ভনভন করে।
নিয়ম অনুযায়ী, পরিস্রুত পানীয় জল, রান্নার কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী কড়াই, গামলা পরিষ্কার রাখতে হবে। এমনকী, মিষ্টিতে কোন রং ব্যবহার করা যাবে না। যদিও সেই নিয়মগুলো মানা হয় না বলে অভিযোগ। অভিযোগ, হাত দিয়েই ক্রেতাদের মিষ্টি দেওয়া হয়। তাতে রোগ জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি চিকিৎসকদের। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ঢাকা না দেওয়া খাওয়ার খেতে সব সময়ই নিষেধ করা হয়। সেই খাবারে ধুলো, বালি পড়ে পেটের রোগ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। শুধু তাই নয়, মশা, মাছি বাহিত রোগও হতে পারে। তাই মিষ্টি প্রস্তুত করা কিংবা দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্লাভস ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। এক কর্মী বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে দোকানে থেকে দেখে দেখে মিষ্টি তৈরির কাজ শিখেছি। কখনও কেউ বলেনি গ্লাভস ব্যবহার করে মিষ্টি তৈরি করতে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘রসের মিষ্টি ছাড়া চিমটে দিয়ে কিছুই দেওয়া হয় না।’’