কেউ প্রার্থী হতে চেয়ে নিজেই আবেদন করেছেন জেলা সভাপতির কাছে। কারও হয়ে আবার সওয়াল করেছেন দলের একাধিক অঞ্চল সভাপতি। আবার কারও নাম উঠে এসেছে দলের স্ক্রিনিং কমিটির আলোচনা থেকে। অবস্থা এমনই যে মালদহ জেলা পরিষদে তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়ে এক একটি আসনে একাধিক দাবিদার তৈরি হয়েছে। আর তার জেরে জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনে প্রার্থী বাছাই করতে ঘাম ছুটেছে জেলা নেতৃত্বের।
শেষপর্যন্ত, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে দাবিদারদের সেই নামের ফাইল বগলদাবা করে তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন দারস্থ হয়েছেন দলের মালদহ জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। মঙ্গলবার সকালেই কলকাতায় পৌঁছেছেন মোয়াজ্জেম সাহেব। দলীয় সূত্রে খবর, জেলা পরিষদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে এ দিনই রাতে শুভেন্দুবাবু বৈঠক করতে পারেন।
২০১৩-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহ জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল মাত্র ৬টিতে জিতেছিল। কিন্তু কংগ্রেসের সভাধিপতি সহ ৬ জন ও সিপিএমের ১১ জন সদস্যকে দলে টেনে ২০১৬-তে জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, গত বছর তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত সদস্য ও বিভিন্ন দল থেকে যে সদস্যরা দলে এসেছেন তাঁদের এ বারও টিকিট দেবে দল। আসন সংরক্ষণের জেরে তাঁদের কারও কোনও অসুবিধে হলে, অন্য আসনে তাঁধের প্রার্থী করা হবে। বাস্তবে দেখা গিয়েছে, সমস্ত আসনেই তৃণমূলের প্রার্থী হতে দাবিদার একাধিক। কোনও আসনে পাঁচজনেরও নাম রয়েছে। দলের ব্লক সভাপতিরা স্ক্রিনিং কমিটিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে যে তালিকা জমা দিয়েছেন, ঐকমত না হওয়ায় সেখানেও একাধিক নাম রয়েছে।
কালিয়াচক ১ ব্লকের ৩৫ নম্বর আসনের দাবিদার দলের ব্লক সভাপতি আবু নাসের খান চৌধুরীর স্ত্রী তন্দ্রা খান চৌধুরী। অন্যদিকে দলের চার অঞ্চল সভাপতিরা সাক্ষর করে ওই আসনে হাজি কেতাবুদ্দিনের নাম প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করেছেন। আবার দাবিদার রয়েছেন এসারুদ্দিন মণ্ডলও। ৩৩ নম্বর আসনে পদ নিয়ে লড়াই পাঁচ জনের মধ্যে। টক্কর চলছে সামিম মিঞা, সাবজুল শেখ, আসরাফুল বিশ্বাস, মোয়াজ্জেম হোসেন, আজাহার শেখের মধ্যে। একই ছবি কালিয়াচক ৩ ব্লকের ৩৭ নম্বর আসনেও।
৩৬ নম্বর আসনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা কৃষি কর্মাধ্যক্ষ চন্দনা সরকার। কিন্তু ওই আসনে প্রার্থী হতে চান রামপ্রসাদ হালদার, বিশ্বজিৎ মণ্ডলেরাও। নিজের আসন সংরক্ষিত হওয়ায় কংগ্রেস থেকে আসা মত্স্য কর্মাধ্যক্ষ সামশুল হক ১৯ নম্বর আসনে দাঁড়াতে চান। কিন্তু ওই আসন ছাড়াতে নারাজ কংগ্রেস থেকেই তৃণমূলে আসা জেলার সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র রায়। জেলার প্রায় সবকটি ব্লকেই রয়েছে একই ছবি। দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘আমি কিছু জানি না। ব্লক সভাপতিদের কাছ থেকে জমা পড়া সেই নামের তালিকা আমি শুভেন্দুবাবুর কাছে জমা দেব। তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’