Tea Estate Problem

বৃষ্টির ঘাটতিতে চা শিল্প বিপন্ন, স্বীকার করল পর্ষদ 

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে মাসে গড়পড়তা ৩৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এ বছর পনেরো দিন পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৮:৫২
Share:

বসন্তকালে এমন ‘খরা’ পরিস্থিতি গত দশ বছরে আসেনি উত্তরবঙ্গে। গ্রীষ্মে বৃষ্টির ছিটেফোঁটা নেই। শুকিয়ে যাচ্ছে চা বাগান। পরিস্থিতি এমনই যে জাতীয় চা পর্ষদের গবেষণা বিভাগ তথা চা গবেষণা কেন্দ্রের নাগরাকাটা অফিস থেকে সরকারি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। চা পর্ষদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বহু চা বাগানে কাজ দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, গাছে পাতাই নেই, শ্রমিকেরা তুলবেন কী! চা গবেষণা কেন্দ্র সতর্কবার্তা জারি করে জানিয়েছে, চা বাগিচার দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’ও বিপন্ন। এই পরিস্থিতিতে বুধবার বিকেলে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর যে পূর্বাভাস শুনিয়েছে, তাতে খানিকটা স্বস্তির আশায় চা বলয়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার বা কাল, শুক্রবার বৃষ্টি হতে পারে, তবে বিক্ষিপ্ত। আগামী রবিবার বা তার পর থেকে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প আসবে, তার ফলে বৃষ্টি হতে পারে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে মাসে গড়পড়তা ৩৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এ বছর পনেরো দিন পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। গত দশ বছরে এমন ব্যতিক্রম হয়নি বলে দাবি। ২০১৪ সাল থেকে এমন শুকনো এপ্রিল-মে মাস উত্তরবঙ্গে আগে আসেনি বলে দাবি। জলপাইগুড়িতে ২০২১ সাল থেকে ক্রমাগত কমেছে বৃষ্টির পরিমাণ। গত এপ্রিলে জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছিল ৮ মিলিমিটার এবং মে মাসে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে দেড় মিলিমিটার। চা গবেষণা কেন্দ্রের নাগরাকাটার মুখ্য উপদেষ্টা স্যাম ভার্গিস বলেন, “অন্তত ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। চা উৎপাদন ইতিমধ্যেই ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমে গিয়েছে। মূল্যবান দ্বিতীয় ফ্লাশের পরিস্থিতিও খারাপ। বহু বাগান পাতা তোলা সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে। বাগানগুলি শ্রমিকদের কাজ দিতে পারছে না।”

এমন নজিরবিহীন পরিস্থিতি এড়ানো কী করে সম্ভব তার কোনও দিশা সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। সংস্থার দাবি, বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ার আশা নেই। অনাবৃষ্টির সঙ্গে কীটনাশকের আক্রমণ এবং সেই আক্রমণ প্রতিহত করার খরচ বেড়ে যাওয়া, জলসেচের খরচ বৃদ্ধি সে সব প্রসঙ্গ এনে চা গবেষণা কেন্দ্রের দাবি, পরিস্থিতি ‘খুবই খারাপ’। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, “চা শিল্প সঙ্কটের মুখে। বৃষ্টি কবে হবে, তার নিশ্চয়তা নেই। যে ভাবেই হোক, শিল্প বাঁচানোর বিকল্প উপায় খুঁজতে হবে।” কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “জলীয় বাষ্পের ঘাটতির জন্য উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছিল না। রবিবার থেকে উত্তরবঙ্গে সেই জলীয় বাষ্প ঢুকতে পারে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement