ভিড়: ‘আপনার পঞ্চায়েতে প্রশাসন’ কর্মসূিচতে। বীরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
‘‘মোকে কোনো নি লাগি। হামিন কে ভিখ না লাগি৷ হামিন অধিকার চাহিল, হামিনকার বাগান খোইল দে।’’ সাদ্রী ভাষায় এই আর্তি জানাচ্ছিলেন চা শ্রমিকেরা। বাংলায় তর্জমা করলে যার মানে দাঁড়ায়, ‘‘আমাদের কিছু লাগবে না। আমরা ভিক্ষে চাই না। আমরা অধিকার চাই। আমাদের বাগান খুলে দেওয়া হোক।’’
এই ভাষাতেই প্রশাসনের কর্তাদের কাছে নিজেদের দাবি জানালেন তিন বছর ধরে বন্ধ ডুয়ার্সের বান্দাপানি চা বাগানের শ্রমিকেরা।
শনিবার আপনার বাগানে প্রশাসন কর্মসূচি পালিত হয় বান্দাপানি চা বাগানে। প্রশাসনের নানা দফতরের কর্তাদের উপস্থিতিতে এ দিন বাগানে স্বাস্থ্য, খাদ্য-সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের স্টল দেওয়া হয়। সেখানেই বাগানের শ্রমিকদের অনেকে বাগান খোলার দাবি জানান। সেই সঙ্গে বার্ধক্য ভাতা, ভোটার কার্ড না থাকার সমস্যা নিয়েও শ্রমিকরা নানা স্টলে ভিড় জমান।
বান্দাপানি চা বাগানের শ্রমিক সুকো ওঁরাও, হরি কুজুর, মার্গারেট বেকরা বলেন, ‘‘তিন বছরের বেশি সময় ধরে বাগান বন্ধ। এ জন্য আমরা প্রচণ্ড সমস্যায় রয়েছি। কাঁচা চা পাতা বিক্রি করে ও পাশের নদীতে পাথর চেলে কোনওরকমে বেঁচে আছি।’’
আরেক বাসিন্দা সুকো ওঁরাও বলেন, ‘‘বাগান বন্ধের পর পেটের তাগিদে অনেকে বাইরে কাজে চলে গিয়েছেন।’’ বান্দাপানি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান রমেশ ওঁরাও বলেন, ‘‘শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানের একমাত্র রাস্তা বাগান খোলার ব্যবস্থা করা।’’ মাদারিহাট-বীরপাড়ার বিডিও সুমন সৌরভ মোহান্তি বাসিন্দাদের জানান, তাঁদের সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এ দিন বান্দাপানি চা বাগানের মতোই ‘আপনার পঞ্চায়েতে প্রশাসন’ কর্মসূচি পালিত হয় বীরপাড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। স্থানীয় জুবিলি ক্লাবের মাঠে এই উপলক্ষে এ দিন ভিড় জমান প্রচুর বাসিন্দা। রেশন, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতার স্টলে ব্যাপক ভিড় ছিল।