শিক্ষক দিবসে স্কুলে উলট পুরাণ

শিক্ষক দিবসের দিন শিক্ষকদের হাতে পড়ুয়াদের অনেকেই উপহার তুলে দেন। এই স্কুলে শিক্ষকেরাই কোনও পড়ুয়ার হাতে তুলে দিলেন রুপোর মেডেল। কেউ আবার পেল নগদ পুরস্কার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৭
Share:

পুরস্কৃত: রুপোর মেডেল পেয়ে তিন পড়ুয়া। নিজস্ব চিত্র

এ যেন এক উলট পুরাণ।

Advertisement

মঙ্গলবার কোচবিহারের টাউন হাইস্কুলে পড়ুয়াদেরই পুরস্কৃত করলেন শিক্ষকেরা।

শিক্ষক দিবসের দিন শিক্ষকদের হাতে পড়ুয়াদের অনেকেই উপহার তুলে দেন। এই স্কুলে শিক্ষকেরাই কোনও পড়ুয়ার হাতে তুলে দিলেন রুপোর মেডেল। কেউ আবার পেল নগদ পুরস্কার। তাতে দৃশ্যতই আপ্লুত পড়ুয়ারা। স্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক শৈলেন বর্মার উদ্যোগে গত বার্ষিক পরীক্ষায় ওই বিষয়ে সর্ব্বোচ্চ নম্বর প্রাপক তিন কৃতীকে রুপোর পদক দেওয়া হয়। শৈলেনবাবুর বাবা জিতেন্দ্রবাবু নাটাবাড়ি হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। তাঁর নামেই এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। গত শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষায় বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রথম স্থানাধিকারীদেরও নগদ পাঁচশ টাকা করে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থসারথি রায় তাঁর প্রয়াত পিতা চারুচন্দ্র রায়ের নামে ওই মেধা পুরস্কার তুলে দেন। পার্থবাবু বলেন, “পড়ুয়াদের উৎসাহ বাড়াতে শিক্ষক দিবসের গুরুত্ব আলাদা। তাই এ দিনই পুরস্কার দিয়েছি।”

Advertisement

মাথাভাঙা ও দিনহাটাতেও শিক্ষক ও পড়ুয়াদের ভূমিকা বদলে গিয়েছিল। রোল কলের খাতা হাতে কোন ক্লাসে ঢুকলেন নতুন ম্যাডাম। কোন ক্লাসে আবার নতুন স্যার। পড়ুয়ারা সমস্বরে গুড মর্নিং বলে স্বাগত জানাল। নতুন শিক্ষক শিক্ষিকারা কখনও চক ডাস্টার নিয়ে ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে বোঝালেন। কখনও আবার ক্লাসে অমনোযোগী এক ছাত্রকে সতর্ক করলেন। মঙ্গলবার কোচবিহারের দুই মহকুমার দুটি স্কুলে ক্লাস নেওয়া ওই স্যার, ম্যাডামেরা ওই স্কুলেরই পড়ুয়া। শিক্ষক দিবসে দিনহাটার জরাবাড়ি হাইস্কুল ও মাথাভাঙার বাইশগুড়ি হাইস্কুলে ক্লাস নিয়ে অভিভূত এক দিনের শিক্ষকেরা।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, জরাবাড়ি হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়ার দায়িত্ব দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের উপরেই দেওয়া হয়। প্রায় এক দশক এমনটাই হচ্ছে। ১২ জনকে শিক্ষকতার জন্য বেছে নেওয়া হয়। তাদের প্রশিক্ষণও দেন শিক্ষকেরা। প্রধান শিক্ষক বরুণ রায় বলেন, “শিক্ষকতার প্রতি নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের আগ্রহ বাড়াতেই আমরা এমনটা করি।’’ আগ্রহী পড়ুয়ারাও। দশম শ্রেণিতে উঠে শিক্ষক দিবসে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষাতে থাকে সবাই। মাথাভাঙার বাইশগুড়ি হাইস্কুলের শিক্ষক সঞ্জয় সাহারও অভিজ্ঞতা ভাল। তিনি বলেন, “প্রত্যেককে সাবলীল লেগেছে। এটাও বড় প্রাপ্তি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন