রাতে আগুন শৌচাগারে, মৃত পরীক্ষার্থী

অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে ইসলামপুর থানার রামগঞ্জের বেলঝাড়ি এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পিঙ্কি নেশা (১৭)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:১১
Share:

পিঙ্কি নেশা

অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে ইসলামপুর থানার রামগঞ্জের বেলঝাড়ি এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পিঙ্কি নেশা (১৭)। রামগঞ্জ শ্যামাপ্রসাদ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী পিঙ্কির মত্যু কি আগুনে পুড়ে, নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে তার মাধ্যমিকে বসার কথা ছিল। এ দিন শোওয়ার ঘর থেকে কিছুটা দূরে শৌচালয় লাগোয়া কাঠ ও পুজোর জিনিস মজুতের ঘরে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন এলাকার লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

Advertisement

মৃতার পরিবারের লোকেদের দাবি, ওই দিন রাত প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ খাওয়াদাওয়া করে ঘুমোতে গিয়েছিলেন পরিবারের লোকেরা। রাত প্রায় ১২টা নাগাদ পাশের বাড়িতে থেকে গাছের শুকনো পাতা পোড়ার শব্দ এবং ধোঁয়ার গন্ধ পান পিঙ্কির কাকা হামিদুল রহমান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে পিঙ্কিদের শৌচালয় লাগোয়া ঘরটিতে আগুন দেখতে পান। এর পরে তাঁরা চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে পড়শিরা ছুটে গিয়ে আগুন নেভান। তত ক্ষণে পিঙ্কির বাবা-মাও উঠে পড়েন। বাইরে এসে হইচইয়ের মধ্যে পিঙ্কিকে তাঁরা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। আগুন নিভে যাওয়ার পরে পুড়ে যাওয়া সামগ্রী পরিষ্কার করার সময় ঘরের মধ্যে ঝলসানো অবস্থায় পিঙ্কিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশকে খবর দেন পড়শিরা। এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিকি আলম বলেন, ‘‘পুড়ে যাওয়া ঘর যখন পরিষ্কার করছিলাম তখন হাত পড়ে পিঙ্কির পায়ে। ভেবেছিলাম গরু পুড়েছে হয়তো। পোড়া কাঠ, বাঁশ সরিয়ে বুঝতে পারলাম পিঙ্কির দেহ পড়ে রয়েছে।’’

পুলিশ এবং ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানান, শোওয়ার ঘর থেকে ৫০ ফুট দূরে গুদামের মতো ওই ঘরের সঙ্গে শৌচালয়টি ছিল। সেটি পাতলা প্লাস্টিক দিয়ে ঘেরা ছিল। গুদাম ঘরের এক পাশে কাঠ মজুত করা ছিল। অন্য পাশে ছিল খড়ের গাদা। পুলিশ এবং নিহতের পরিবারের লোকেদের আশঙ্কা, রাতে শৌচালয়ে লণ্ঠন নিয়ে গিয়েছিল পিঙ্কি। সেখানেই কুপি থেকে কোনও ভাবে আগুন ধরে যায় প্লাস্টিকে। এর পরে দ্রুত গায়ে আগুন ধরে যাওয়ায় পিঙ্কি একেবারে বাইরে বেরোতে পারেনি। আগুন খড় এবং কাঠে ধরে যাওয়ায় সেখানেই অগ্নিদগ্ধ হয় সে।

Advertisement

ছাত্রীটির বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই তার কাকার বাড়ি। আশপাশেও বাড়ি রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, গায়ে আগুন লাগার পর ছাত্রী চিৎকার করলেও কেন প্রতিবেশীরা শুনতে পেলেন না। পিঙ্কির বাবা জমিরুদ্দিন বলেন, ‘‘রাতে কাউকে না জানিয়েই শৌচালয়ে গিয়েছিল মনে হচ্ছে। গভীর রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম প্রত্যেকেই। কোনও চিৎকার শুনিনি মেয়ের। আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন