ফাইল চিত্র।
ট্রেন থামলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে গন্ধ শুঁকে বিস্ফোরক বের করতে হয়। এরকম গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা দু’টি স্মিফার ডগ বিপুলা এবং ওজের অনুশীলন পূর্ণ মাত্রায় হচ্ছে না এনজেপি স্টেশনে রেলপুলিশের ডগ স্কোয়াডে, উঠেছে এমনই অভিযোগ। তার জেরে নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিষয় রেলের কাঁধে থাকলেও রেল কর্তারা দায় ঠেলেছেন রেলপুলিশের কাঁধেই।
এনজেপি স্টেশনে রেলপুলিশের ডগ স্কোয়াডের ওই দু’জনের উপরেই রয়েছে গুরুদায়িত্ব। কিন্তু কর্মী ও জায়গার অভাবে বিস্ফোরক খোঁজার ক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্নিফার ডগ দু’টির অনুশীলন মার খাচ্ছে বলে দাবি। রোজ যতটা অনুশীলন হওয়া দরকার তা হচ্ছে না বলে সূত্রের খবর।
এনজেপি স্টেশনের পাশেই ডগ স্কোয়াডের কেনেল। তাতে ল্যাব্রাডর এবং জার্মান শেফার্ড প্রজাতির ওই দুই স্নিফার ডগের বয়েস দু’বছর। তাদের চেন্নাই থেকে আনা হয়েছিল। সূত্রের খবর, কড়া অনুশীলনের জন্য কেনেলের উঠোন ঘাসমুক্ত করে রাখার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না।
বুধবার গিয়ে দেখা গেল, ডগ স্কোয়াডের উঠোনে ঘাস, আবর্জনায় ভর্তি। স্টেশন চত্ত্বরও অপরিচ্ছন্ন থাকায় সব সময় অনুশীলন করানো যাচ্ছে না। এরকম পরিস্থিতিতে তাদের কর্মদক্ষতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন রেল কর্তাদের একটি অংশই।
শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডগ স্কোয়াডের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘স্নিফার ডগের প্রশিক্ষণের পর তাদের নিয়মিতভাবে অনুশীলনের মধ্যে রাখা দরকার। তা না হলে তাদের কর্মদক্ষতা ক্রমাগত কমতে থাকে।’’
কেনেলের অবস্থাও তথৈবচ। ঘরের চাঙর খসে পড়ছে। পানীয় জলের সরবরাহ নেই। সেপটিক ট্যাঙ্ক বিগড়ে যাচ্ছে বার বার। ভাঙা জানালা থেকে বৃষ্টির ছাট আটকাতে দেওয়া হয়েছে বাঁশের দরমা। শীতকালে কুকুরকে রাখার জন্য চৌকি থাকার কথা। কিন্তু সেটিও ভেঙেচুরে গিয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা, একটি করে স্নিফার ডগের পিছনে একজন মাস্টার এবং একজন সরকারি কর্মী মিলিয়ে দু’জন করে থাকার কথা।কিন্তু এনজেপিতে দু’টি স্নিফারের জন্য রয়েছে তিনজন স্টাফ। কেনেলের দেখভাল করার জন্য চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থাকার কথা। কিন্তু ওই পদে একজন অস্থায়ী কর্মী রয়েছে এনজেপির ওই ডগ স্কোয়াডে।
যাত্রী নিরাপত্তায় ট্রেনে বিস্ফোরক, মাদক খুঁজে বের করা ছাড়াও, বিপর্যয়ে উদ্ধার কাজে, কোনও অপরাধীদের খুঁজে বের করার কাজে সাহায্য করার মতো গুরুদায়িত্ব যাদের কাঁধে তাদের নিয়ে এরকম অবহেলা কেন? পরিকাঠামোর জন্য কোনও রেলপুলিশকর্তা বা রেল কর্তৃপক্ষ কোনও তরফেই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের এডিআরএম পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘আমরা রেলপুলিশকে যাবতীয় খরচের জন্য নিয়মিতভাবে টাকা
দিয়ে দেই। এসব তাদেরই দেখার কথা।’’ যদিও শিলিগুড়ির রেলপুলিশ সুপার আন্নাপা ই বলেন, ‘‘ডগ স্কোয়াড নিয়ে কোনওরকম সমস্যা নেই। রোজই অনুশীলন ঠিকমতো করানো হয়। ’’