শিশুরা যাবে জ্যাঠার কাছে

ঘটনার পর থেকে বাবা-মাকে বেশ কয়েকবার খুঁজেছে ওই শিশু দু’টি। মা-কে না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে অজয় ও মীনার তিন মাসের মেয়ে ভিনায়াও। দুধের ওই শিশুর জ্বর কমছে না। এখন দাদুর বাড়িতে রয়েছে সে। আর তার দাদা বিভান পাড়াতেই মীনার এক আত্মীয়ের বাড়িতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০৮:৩০
Share:

শোক: আত্মীয়ের কোলে মৃত দম্পতির এক সন্তান। নিজস্ব চিত্র

মাঝরাতে ঘুম ভেঙে মায়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখেছিল বিভান। ওই রাতে ভয়ে, আতঙ্কে অনেকক্ষণ ধরে কেঁদে শেষে ক্লান্ত হয়ে আবার মায়ের দেহের পাশেই ঘুমিয়ে পড়েছিল সে।

Advertisement

বাগডোগরায় খুন হওয়া কেটারিং ব্যবসায়ী অজয় কুশওয়াহা ও তাঁর স্ত্রী মীনার চার বছরের ছেলে বিভান। ২১ জুলাই রাতে বাবা-মাকে খুন হতে দেখেছিল ওই শিশুটি। ঘটনার সময় মায়ের শরীরের রক্তের ছিটে পড়েছিল তার টি-শার্টেও। মর্মান্তিক এই স্মৃতি ভবিষ্যতে বিভানের মনকে তাড়া করে ফিরুক, তা মোটেই চান না অজয়ের আত্মীয়স্বজনেরা। উত্তরপ্রদেশ থেকে বাগডোগরায় এসেছেন অজয়ের দুই দাদা। অজয়ের মেজদা প্রদীপ রবিবার জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের ভাইপো-ভাইঝিকে কানপুরে নিয়ে যাবেন। সেখানেই তারা বড় হবে।

ঘটনার পর থেকে বাবা-মাকে বেশ কয়েকবার খুঁজেছে ওই শিশু দু’টি। মা-কে না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে অজয় ও মীনার তিন মাসের মেয়ে ভিনায়াও। দুধের ওই শিশুর জ্বর কমছে না। এখন দাদুর বাড়িতে রয়েছে সে। আর তার দাদা বিভান পাড়াতেই মীনার এক আত্মীয়ের বাড়িতে।

Advertisement

বিভানের জ্যাঠা প্রদীপ বলেন, ‘‘ওদের নিয়েই যাব বলে ঠিক করেছি। কিন্তু নথিপত্র এখনও কিছুই হাতে পেলাম না।’’ কানপুরে অজয়ের বাবা-মা রয়েছেন। তাঁরাই বাচ্চা দু’টির আইনি অভিভাবক। তাই বিভান এবং ভিনায়াকে নিয়ে যেতে চাইলে মীনার পরিবার আপত্তি করবে না বলেই জানা গিয়েছে। ২১ জুলাই ঘটনার রাত থেকেই সুকান্তনগরের বাড়ি ‘সিল’ করে দিয়েছিল পুলিশ। শনিবার ফরেন্সিক দলের সদস্যরা এসেছিলেন সেখানে। কিন্তু বাড়িটি রবিবারও পরিবারের লোকজনকে হস্তান্তর করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের আরও একটু কাজ সেরে তাঁদের হাতে বাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হবে।

অজয়ের দাদা প্রদীপ বায়ুসেনার কর্মী। তিনি ছুটি নিয়ে এসেছেন। তিনি চাইছেন, অজয়ের যাবতীয় সম্পত্তি, আধার কার্ড, বাড়ির দলিল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সমস্ত কিছু দেখে টাকাপয়সা অজয়ের ছেলেমেযের নামে করিয়ে নিতে।

সুকান্তনগরের ওই বাড়ি ছাড়াও অজয় ও মীনার ওই পাড়াতেই আরও একটি বাড়ি রয়েছে। শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে কেনা দু’টি জমির প্লটও রয়েছে। অজয় কানপুরের দেশের বাড়ি থেকে খানিকটা দূরত্ব বজায় রাখত বলে জানা গিয়েছে। তাই অজয়ের নামে কোথায় কী কী সম্পত্তি রয়েছে সে ব্যাপারে দাদারা এখনও অন্ধকারে। তাঁদের পরিকল্পনা রয়েছে, সব কিছু অজয়ের ছেলেমেয়ের নামে করে দিয়ে তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেবেন তাঁরা। যদিও তিন মাসের ভিনায়া মা-কে ছাড়া অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছে পরিবার। তাকে সুস্থ করার পরেই এসব নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে কুশওয়াহা পরিবারের তরফ থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন