বাড়ির পথে। — নিজস্ব চিত্র
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু দুর্বল শরীরে একা হাঁটাচলা কার্যত শিকেয়। তবুও প্রতিবাদের স্বর কিন্তু ফিকে হয়নি এতটুকুও। তাকে যারা মারধর করেছিল সেই মোড়ল পরিবারের সদস্যদের হুমকিতে পরিবারের উদ্বেগ বাড়লেও, তা ছুঁতে পারেনি অমৃতির নাদাবপাড়া গ্রামের বছর ষোলোর বিউটি খাতুনকে। শরীর অশক্ত হলেও তার কথায়, ‘‘আমাকে যতই মারধর দেওয়া হোক না কেন, গ্রামে বা আশপাশে কোনও নাবালিকার বিয়ের খবর পেলেই আমি গিয়ে প্রতিবাদ করব। রুখে দেব সেই বিয়ে।’’
রবিবার মালদহ জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিকরাই গাড়ি করে হাসপাতাল থেকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গিয়েছেন বিউটিকে। তারপর থেকেই তাঁকে দেখার জন্য মানুষের ভিড় বাড়ছে বাড়িতে। আশেপাশের গ্রামগুলি থেকেও ছুটে আসছেন মহিলারা। মোমিনপাড়া গ্রামের আতিয়া বিবি বলেন, ‘‘মেয়েটির কথা শুনেছি। তাই দেখতে এসেছি।’’ বৌভাতের আসরে গিয়ে নাবালিকার বিয়ের প্রতিবাদ করায় বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল বিউটিকে। সেই ঘটনার পর সাত দিন কেটে গেলেও এখনও অভিযুক্তদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এই ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে গোটা এলাকায়। বিউটির বাবা মকবুল ও দাদা ইলিয়াস এ দিন অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার মারধরের ঘটনার পর বুধবার শুধু দু’বার গ্রামে পুলিশ এসেছিল। অভিযুক্তদের বাড়ি তালাবন্ধ দেখে ফিরে যায় তারা। ইংরেজবাজার থানার ওসি পূর্ণেন্দু কুণ্ডু অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা বসে নেই। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে। কিন্তু তাঁরা সকলেই এলাকাছাড়া।
এ দিকে, প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিউটির সাহসিকতাকে সম্মান জানাতে এ দিন এক অনুষ্ঠানে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল রাজ্য সরকারের। কিন্তু সুস্থ না হওয়ায় বিউটি যেতে পারেনি। আজ মঙ্গলবার শিশুকন্যা দিবস উপলক্ষে ইংরেজবাজার ব্লক প্রশাসন নাদাবপাড়া গ্রামেই একটি অনুষ্ঠান করে তাঁকে সংবর্ধনা দিতে চায়।