ফিলিপিন্সেই শেষ উৎকণ্ঠা

এর আগে এ দিন সকাল থেকেই মেডিক্যাল কলেজে ছিল সাজসাজ রব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১৭
Share:

তখনও উদ্বেগ: আইসোলেশন ওয়ার্ডের মুখে এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র

দিল্লি থেকে যে তালিকা এসেছিল, তাতে ছিল উত্তরবঙ্গের এক ব্যক্তির নাম। সেই তথ্য অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি বিমানসেবিকা এবং তিনি সম্প্রতি চিন হয়ে এসেছেন। তাই তাঁকে খুঁজে বার করে নজরে রাখা জরুরি। দু’দিন ধরে হন্যে হয়ে সেই ব্যক্তির খোঁজ চলেছে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জেলা জুড়ে। তৈরি হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’। নার্স, কর্মীরা তো বটেই, স্থানীয় টোটোচালকরাও মুখে মুখোশ পরে ওই চত্বরে ঢোকেন। দিনভর চলে উদ্বেগ। তার পরে সন্ধ্যায় জানা যায়, তথ্যের দিক থেকে কিছু ভ্রান্তি ছিল। ওই চিন নয়, ফিলিপিন্স হয়ে দেশে ফিরেছেন ওই মহিলা। এই খবর জানার পরে স্বস্তির শ্বাস ফেলে জেলার স্বাস্থ্যমহল।

Advertisement

এর আগে এ দিন সকাল থেকেই মেডিক্যাল কলেজে ছিল সাজসাজ রব। তখন খবর ছিল, চিন ফেরত ওই বিমানসেবিকার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে। এই অবস্থায় তাঁকে আলাদা রাখা দরকার। খবর আসে, তাঁকে বাড়িতে সেই ভাবে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পরে নিয়ে আসা হবে মেডিক্যালে।

কিন্তু প্রথম থেকেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর দাবি করছিল, তারা বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানে না। দিল্লি এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে যে নির্দেশ আসছে, তা-ই পালন করা হচ্ছে, জানান জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা। এই লুকোছাপা কেন, সেই প্রশ্নও ওঠে। বলা হয়, জেলা স্বাস্থ্য দফতর, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু জানেন না বলে রোগীকে আড়াল করতে চাইছেন। যদিও তাঁরা জানান, এমন কারও বিষয়ে তাঁরা কোনও রিপোর্ট পাননি।

Advertisement

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এ দিন জানানো হয়, জেলা স্বাস্থ্য দফতরই তাদের লোক দিয়ে খোঁজখবর চালায়। সেই তদন্তে দেখা যায়, ওই বিমানসেবিকা চিন হয়ে আসেননি, এসেছেন ফিলিপিন্স হয়ে। জেলা থেকে সেই তথ্য রাজ্যকে জানানো হয়। রাজ্য তা জানায় দিল্লিকে। যাবতীয় উদ্বেগের অবসান হয় এর পরে।

এত লুকোছাপা কেন করল জেলা স্বাস্থ্য দফতর? একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিষয়টির সঙ্গে যেহেতু করোনাভাইরাসের মতো অত্যন্ত ছোঁয়াচে একটি সংক্রমণ যুক্ত, তাই তথ্য প্রকাশ করতে চাইছিলেন না তাঁরা। কারণ, এর ফলে এক দিকে যেমন অযথা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা ছড়ায়, অন্য দিকে তেমনই রোগীকে একঘরে করে দেওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা চাননি এমন কিছু হোক।

বস্তুত, আইডি-তে সাজসাজ রব হলেও এ দিন সকালেও মেডিক্যালের সুপার বলেন, ‘‘কাউকে আনা হচ্ছে বলে এখনও কোনও রিপোর্ট নেই। উপসর্গ না থাকলে আমাদের এখানে কাউকে আনার দরকারও নেই। তাঁকে ‘কোয়ারেনটাইন’ করে আলাদা রাখলেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন