Jalpaiguri Storm

মোদী-সাক্ষাৎ না পেয়ে ‘ক্ষুব্ধ’ দুর্গতেরা

বিজেপি সূত্রের দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য করা হচ্ছে। তবে নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে সেগুলি প্রকাশ্যে বলা সম্ভব হচ্ছে না।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৩৯
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা না হওয়ার ‘আফশোস’ বদলে যাচ্ছে ক্ষোভে। ঝড়ে বিধ্বস্ত ময়নাগুড়ির বার্নিশ থেকে অন্তত দশটি পরিবারের প্রতিনিধিদের বিজেপি গত রবিবার নিয়ে গিয়েছিল ধূপগুড়ির ময়নাতলিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায়। সেখানে মৃতের পরিবারের সদস্যেরাও ছিলেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে তাঁরা জানতে পারেন, মোদী-সাক্ষাৎ সম্ভব নয়। বিজেপির তরফে আগে থেকে তাঁদের নাম প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা সংস্থাকে জানানোই হয়নি বলে জানতে পারেন তাঁরা। সভা শেষে বাড়ি ফিরে গিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মৃত সমর রায়ের ছেলে নারায়ণ বলেন, “প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথাই বলা হয়েছিল। কিন্তু দূরেই দাঁড়িয়ে থেকে দেখলাম। এ কথা আগে বললে ভাল হত। ক্ষতিপূরণের কথাও তেমন হল না, ভোট পার হলে দেখবে বলল। এমনটা আশা করিনি।”

Advertisement

বিজেপি সূত্রের দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য করা হচ্ছে। তবে নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে সেগুলি প্রকাশ্যে বলা সম্ভব হচ্ছে না। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত একটি পরিবারের প্রতিনিধি বলেন, “আমরা তো নিজেরা যেতে চাইনি, বিজেপির অনুরোধেই রাজি হয়েছিলাম। রাজনীতি নয়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ বলেই রাজি হয়েছিলাম। প্রথমে হেলিপ্যাডে রাখা হল, তার পরে অন্য এক নেতার সঙ্গে আলোচনা করানো হল। দূর থেকে দেখলাম প্রধানমন্ত্রীকে।”

বিজেপির অন্দরের খবর, ঝড়-দুর্গতদের মোদী সাক্ষাতের পরিকল্পনা ‘পণ্ড’ হওয়ার মূলে রয়েছে দু’টি বিভ্রাট। প্রথমত, একাধিক পরিবারের প্রতিনিধির কাছে পরিচয়পত্র ছিল না। ঝড়ে অনেকে পরিচয়পত্র খুইয়েছেন। পরিচয়পত্র ছাড়াও মোদীর সামনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল। সে ক্ষেত্রে, সভার ৪৮ ঘণ্টা আগে নিরাপত্তা সংস্থাকে নাম জমা দিতে হত। তাও করেনি বিজেপি। বিজেপির এক নেতার কথায়, “জেলা নেতারা গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। আগে জানাজানি হলে পরিবারগুলিকে আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কি কোনও লাভ হল?”

Advertisement

এ দিকে, এ নিয়ে আসরে নেমেছে তৃণমূল। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে দুর্গতদের ত্রাণ বিলির শিবিরে ঠায় পড়ে রয়েছেন এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী। বিভিন্ন সমাজমাধ্যমের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনিও ত্রাণ শিবিরে বসে খাবার খাচ্ছেন। যদিও সৌরভ বলছেন, “রাজনৈতিক ভাবে নয়, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে আমি যুক্ত।” তৃণমূল সূত্রের দাবি, ভোটের আগে ঝড়ে দুর্গতদের মনে যাতে রাজ্য বা তৃণমূল নিয়ে কোনও ক্ষোভ না থাকে, তার জন্যই ঝাঁপিয়েছেন সৌরভ। সভায় মোদীর সাক্ষাৎ না পেয়ে গ্রামের ক্ষোভও উস্কে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা।

জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “ঝড়ের খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাতেই চলে এসেছিলেন। আর প্রধানমন্ত্রীর সভায় নিয়ে গিয়েও মোদীর ধারেকাছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।” বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “ত্রাণ নিয়ে তৃণমূল ভোটের রাজনীতি করছে। আর একবার প্রমাণ হয়ে গেল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন