নোট বাতিলে বিক্রি কমেছে রাসমেলায়

নোট বাতিলের ধাক্কায় মার খেল দু’শো বছরেরও বেশি প্রাচীন কোচবিহারের রাসমেলার ব্যবসাও। এ বার মেলায় ব্যবসা হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকার। গত বারের তুলনায় ওই ব্যবসার টাকার অঙ্ক কমেছে অন্তত ১০ কোটি টাকা। গত তিন বছরের হিসেবে সব থেকে কম। প্রাথমিক হিসেব নিকেশের পরে জেলার ব্যবসায়ী সংগঠন কর্তাদের দেওয়া তথ্যে বিষয়টি উঠে এসেছে।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:২৭
Share:

শেষ দিনের ভিড়ে মিলল কিছুটা স্বস্তি। — নিজস্ব চিত্র

নোট বাতিলের ধাক্কায় মার খেল দু’শো বছরেরও বেশি প্রাচীন কোচবিহারের রাসমেলার ব্যবসাও। এ বার মেলায় ব্যবসা হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকার। গত বারের তুলনায় ওই ব্যবসার টাকার অঙ্ক কমেছে অন্তত ১০ কোটি টাকা। গত তিন বছরের হিসেবে সব থেকে কম। প্রাথমিক হিসেব নিকেশের পরে জেলার ব্যবসায়ী সংগঠন কর্তাদের দেওয়া তথ্যে বিষয়টি উঠে এসেছে। রবিবারই ছিল এ বারের রাসমেলা শেষ দিন। ২৩ নভেম্বর থেকে মেলা শুরু হয়েছিল। ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রেই জানা গিয়েছে, পুরসভা ও প্রশাসন মেলার মেয়াদ চার দিন না বাড়ালে ব্যবসার অঙ্ক আরও কমত।

Advertisement

কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত সাহা বলেন, “নোট বাতিলের প্রভাব রাসমেলায় পড়েছে। এ বার প্রায় ২৫ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ওই টাকার অঙ্ক অনেকটা কম।” কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “গত বার ৩৫ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা হয়েছিল। এ বার শনিবার পর্যন্ত ওই অঙ্ক বড় জোর ২২ কোটি ছিল। রবিবার রাত পর্যন্ত খুব ভাল ব্যবসা হলেও ২-৩ কোটি টাকার বেশি হবে না। নোট বাতিলের প্রভাবে এমন সমস্যা হয়।”

ব্যবসায়ীদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ বার ১৪ নভেম্বর রাস উৎসব হয়। এ বার কোচবিহার লোকসভার উপ নির্বাচনের জন্য মেলা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। ২৩ নভেম্বর মেলা শুরুর সময় তা ছিল মাসের শেষ সপ্তাহ। তার উপর পাঁচশো ও এক হাজার টাকার নোট বাতিলের জেরে বাসিন্দাদের আর্থিক সমস্যায় জেরবার অবস্থা। ফলে শুরুর পর টানা এক সপ্তাহ তেমন ভিড় হয়নি। বিকিকিনিও ছিল তুলনামূলক ভাবে কম। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে ভিড় বাড়তে শুরু করে। কিছুটা বিক্রিও বাড়ে। পরিস্থিতির জেরে ৭ ডিসেম্বরের বদলে মেলার মেয়াদ ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানানো হয়। তারপরে মূলত শেষ ওভারে ছক্কায় ব্যবসার অঙ্ক ভদ্রস্থ হয়েছে। রাসমেলার পসরা নিয়ে আসা এক ব্যবসায়ী বিমল দেবনাথ বলেন, “মেলা বাড়ায় কিছুটা সুবিধে হয়। তাতে লাভ বেশি না হোক, মেলার সামগ্রিক খরচ টুকু উঠেছে।” অপর এক ব্যবসায়ী শরৎ দে বলেন, “প্রথমটায় তো বসে বসে মাছি তাড়ানোর অবস্থায় ছিলাম। শেষের কটা দিন বাঁচিয়ে দিল।” পুরপ্রধান রেবা কুণ্ডু বলেন, “শেষ দিনে ভিড় হয়েছে। মেয়াদ বৃদ্ধিটা কাজে লাগায় ভাল লাগছে।” ব্যবসায়ীরা জানান, জামাকাপড়ে ৫ কোটি, সার্কাস, নাগরদোলা ও বিভিন্ন বিনোদন খাতে ৪ কোটি, রেস্তোরাঁ ও খাবারের দোকান মিলিয়ে ৩ কোটি টাকার মতো ব্যবসা হয়েছে।

Advertisement

শেষ তিন বছর

২০১৪ সাল- ৪০ কোটি টাকা।

২০১৫ সাল- ৩৫ কোটি টাকা।

২০১৬ সাল- ২৫ কোটি টাকা।

(ব্যবসায়ী সংগঠনের দেওয়া

তথ্য অনুযায়ী)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন