medicines

জীবনদায়ী ওষুধের মজুত দ্রুত কমছে

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মতো সরকারি হাসপাতালেও করোনা রোগের এই সঙ্কটকালীন ওষুধ কার্যত আর মজুত নেই।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনার মোকাবিলায় অন্যতম জীবনদায়ী অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ‘রেমডেসিভির’-এর সরবরাহে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন নার্সিং হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে চাহিদার তুলনায় মাত্র ২৫ শতাংশ ওই ইঞ্জেকশন মিলছে। অনেক ক্ষেত্রে কালোবাজারি হচ্ছে বলেও অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মতো সরকারি হাসপাতালেও করোনা রোগের এই সঙ্কটকালীন ওষুধ কার্যত আর মজুত নেই। এর ফলে কোভিডের চিকিৎসা করতে গিয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির চিকিৎসকদের। বাধ্য হয়ে তাঁদের অন্য িবকল্প ওষুধের উপর ভরসা করতে হচ্ছে। এই সঙ্কট পরিস্থিতিতে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের কয়েকটি রাজ্যে ওই ওষুধের অন্তর্বর্তীকালীন সরবরাহ ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে কোভিডের ‘ইনভেস্টিগেশনাল থেরাপি’ হিসাবে তা দেওয়া হচ্ছে। তবে চাহিদার তুলনায় এই রাজ্যে তা অনেকটাই কম মিলছে বলে চিকিৎসকদের একাংশের দাবি।

Advertisement

জেলার সরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও জোগান নেই রেমডেসিভিরের। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ থেকে সপ্তাহখানেক আগে এটির বরাত দিলেও এখনও আসেনি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ বা দার্জিলিং জেলার অন্যান্য হাসপাতালে এই ওষুধ এখন নেই বলেই জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক। দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘জোগান কম থাকায় হাসপাতালে ওই ওষুধ মজুত নেই। তবে চিকিৎসকরা অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করছেন। যদিও সকলের জন্য ওই ওষুধ দরকারও হয় না।’’

কোভিডের চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের একাংশ জানান, কোভিডের চিকিৎসায় অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভির বিশ্ব জুড়েই ব্যবহৃত হচ্ছে। রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে কমতে থাকলে ওই ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের দার্জিলিং জেলা শাখার কর্মকর্তারা জানান, গত দিন দশেক ধরে রেমডিসিভিরের জোগানে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে সংক্রমণ তলানিতে পৌঁছলে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছিল প্রস্তুতকারী সংস্থাটি। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই রেমডিসিভিরের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। ফলে জোগান কমেছে। বাজারে যেটুকু আচে, সেটা নিয়েও কালোবাজারি শুরু হয়েছে বলে তাঁরাও বুঝতে পারছেন। অনেক ওষুধ ব্যবসায়ী, দোকানদারদের একাংশ তা আটকে রাখছে বলে অভিযোগ। আইএমএ’র দার্জিলিং জেলা সম্পাদক শেখর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রেমডিসিভির অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগের প্রচণ্ড অভাব দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনের ২৫ শতাংশ রোগীকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।’’ তিনিও জানান, অনেক ক্ষেত্রে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আগে প্রতিটি ইঞ্জেকশনের দাম ছিল ৪ হাজার টাকা। ডিসেম্বরে চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম ১ হাজার টাকা করা হয়। এখন আবার দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

নিয়ম অনুযায়ী, খোলাবাজারে এই ওষুধ মিলবে না। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে রোগী হাসপাতাল, নার্সিংহোম বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি থাকলে সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে আবেদন করতে হবে। সেই সংস্থা স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরদের চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন অনুসারে ওই ওষুধ দেবে। ডিস্ট্রিবিউটররা হাসপাতাল, নার্সংহোম, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরাসরি সরবরাহ করবে। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের দার্জিলিং জেলার সম্পাদক বিজয় গুপ্তা বলেন, ‘‘কালোবাজারির অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। আমরা নজর রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন