ফাইল চিত্র।
পাহাড়ের রানিতে অবৈধ নির্মাণের রমরমা— জিটিএ-র প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে লেখা জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তের এক চিঠিতে এমনই সন্দেহ ঘনিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে তালিকা জেলাশাসক দিয়েছেন, তার সব ক’টিই বিমল গুরুংয়ের আমলে তৈরি।
দার্জিলিংয়ের যে বেআইনি বহুতল রয়েছে, তা এক অর্থে মেনে নিয়েছেন জিটিএ-র এক আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘আইন ভেঙে দার্জিলিং শহরে অনেক বহুতল নির্মাণ করা হয়েছে। এখনও কিছু বহুতল তৈরি হচ্ছে। ধাপে ধাপে প্রত্যেকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জিটিএ আর একটি সূত্রেও দাবি করা হয়েছে, বেশ কিছু বহুতলের বিরুদ্ধে এমন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর আগে বিমলের এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে পাতলেবাসের কাছে তাকভর এলাকায় আইন ভেঙে চা বাগানের জমিতে বহুতল স্কুল ভবন তৈরির অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় ভূমি সংস্কার দফতরের একাধিক আধিকারিকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। বিমল ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে রাজভবন লাগোয়া এলাকায় অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। ফলে বিমলের আমলে তৈরি প্রতিটি বহুতলের কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখা শুরু হবে বলেই প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশে আলোচনা শুরু হয়েছে।
তবে অবৈধ নির্মাণ চিহ্নিত করার মধ্যে কোনও রাজনৈতিক যোগ আছে বলে মানতে নারাজ বিনয় তামাং। জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক প্রধান বলেন, ‘‘আইন ভেঙে নির্মাণ হলে প্রশাসন আইন অনুসারেই ব্যবস্থা নেবে।’’ জয়সী বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছিলাম। তার ভিত্তিতে তদন্ত হয়েছে। আইন ভেঙে বহুতল নির্মাণের বিষয়টি উঠে এসেছে সেই তদন্তেই। তাই জিটিএ-র প্রধান সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’
জেলাশাসক তাঁর চিঠিতে যে ক’টি বাড়ির কথা লিখেছিলেন, শুক্রবার সেগুলিতে গিয়ে দেখা গেল হয় লোকজন নেই, নয়তো কর্তৃপক্ষ বিশেষ কিছু জানেন না। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য একটি বাড়ি লিজ় নিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। অভিযোগ, পরে তিনি সেই বাড়িতে অন্যকে হোটেল করতে দেন। এই নিয়ে যে নাড়াচাড়া হয়েছে, হোটেল কর্তৃপক্ষ তা জানেন না। তবে যিনি লিজ় নিয়েছিলেন, তিনি জানান, লিজ় চুক্তি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন। অন্য বাড়িগুলিতেও কিছু ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। অনেকেই প্রশাসনের কাছ থেকে এখনও চিঠি পাননি। চিঠি পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে পাহাড়ের অনেকেই বলছেন, ভোট আসছে, তাই বিমলের বেআইনি কার্যকলাপ এ বার তদন্তের আতসকাচে ধরা হবে।