বাণিজ্যের বিকাশে জেলায় শিল্প তালুক চায় বণিক মহল। অভিযোগ, প্রায় এক বছর হতে চলল আলিপুরদুয়ার জেলা গঠন হলেও সেখানে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প গঠনের জন্য আধিকারিক নেই। শিল্প তালুকের জন্য চিহ্নিত করা হয়নি কোনও জায়গাও।
আলিপুরদুয়ারের এক দিকে অসম রাজ্য, এক দিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটান, অন্য দিকে কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা। উত্তর পূর্ব ভারতে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পথ গিয়েছে এই জেলার মধ্যে দিয়ে। বিচ্ছিন্ন ভাবে আলিপুরদুয়ারে স্টিলের আসবাবের ছোট কারখানা তৈরি হলেও শিল্প তালুক না থাকায় অসুবিধের কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আলিপুরদুয়ার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ দে বলেন, “জেলায় নানা ধরনের সব্জি উৎপাদন হয়। উৎসাহী উদ্যোগপতি রয়েছেন। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ থেকে শুরু করে ছোট কারখানা এখানে গড়ে উঠতে পারে। তবে শিল্প তালুক না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা জেলাপরিষদের সভাধিপতিকে জানিয়েছি। রাজ্য সড়ক বা জাতীয় সড়কের ধারে উপযুক্ত পরিবেশে শিল্প তালুক গড়লে অনেক ছোট শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’’
জেলা পরিষদের তৃণমূল সভাধিপতি মোহন শর্মা বলেন, “এখানে শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা শিল্প তালুকের জন্য জায়গার খোঁজ করছি। আশা করছি শীঘ্র জায়গা পেয়ে যাব। তার পরে আমার সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।” জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অতুল সুব্বা বলেন, “জেলার জয়গাঁ শহরের পাশে ভুটান, বারবিশার পাশে রয়েছে অসম। আলিপুরদুয়ার শহরের পাশে তপসিখাতা এলাকায় কিছু সরকারি জমি রয়েছে। আমরা সমস্ত এলাকার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছি।” অতিরিক্ত জেলা শাসক দেবীপ্রসাদ করণম বলেন, “জেলা শিল্প কেন্দ্রের আধিকারিক পদের জন্য উচ্চ মহল জানানো হয়েছে।”
আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “প্রায় বছর খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠিতে শিল্প তালুকের প্রয়োজনীয়তার কথা লিখেছিলাম। তপসিখাতার কাছে প্রায় ৬৪ একর জায়গা রয়েছে। তাতে শিল্প তালুক গড়া যেতে পারে। শিল্প তালুক হলে রাজ্য সরকার সেখানে জল, বিদুৎ ও রাস্তার ব্যবস্থা করে দেবে। এতে ছোট উদ্যোগপতিরা উৎসাহ পাবেন।” ডিওয়াইএফের আলিপুরদুয়ার ২ লোকাল কমিটির সম্পাদক অরিন্দম নিয়োগী জানান, জেলায় প্রায় এক বছর ধরে কর্ম সংস্থানের কোনও সুযোগ হয়নি। শিল্প তালুক হলে বেকার যুবক যুবতীরা সেখানে কাজের সুযোগ পাবেন।’’
স্টিলের আসবাব তৈরির কারখানার মালিক নন্দন ঘোষ বলেন, “নিজেরা জমি কিনে বিদুৎ সংযোগ নিয়ে কারখান গড়েছি। শিল্প তালুক হলে সেই সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই মিলবে। আমরা শিল্প তালুকে কারখানা গড়তে ইচ্ছুক।’’ বারবিশার সরষের তেল কারখানার মালিক সুরেশ চন্দ্র সাহা বলেন, “শিল্প তালুক গড়ার সঙ্গে বিদুৎ-সহ বিভিন্ন করে ছাড় দেওয়ার বিষয় চিন্তাভাবনা করলে ছোট উদোগপতিরা আরও নতুন কারখানা গঠতে উৎসাহ দেখাবে। বিষয়টি সরকারের ভাবা উচিত।”