একজন অসুস্থ হয়ে ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে আরও কয়েকজনের। তার পরেও দাবিপূরণে টানা অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক ছিটমহলের মেখলিগঞ্জের ভোটবাড়ি ত্রাণ শিবিরের বাসিন্দারা।
বুধবার দুপুর থেকে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় তাঁদের অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন জানালেও নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন তাঁরা। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “সমস্যা সমাধানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।” মেখলিগঞ্জের মহকুমাশাসক অপ্রতীম ঘোষ বলেন, “কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
বাসিন্দারা জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে ভোটবাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্পে রয়েছেন তাঁরা। সেখানে টিনের ছোট ছোট ঘরে গরমে টেকা দায়। আবার বৃষ্টির সময় ঘরে জল ঢুকে যায়। শীতে সঙ্গী হয় কুয়াশার জল। শুধু তাই নয়, পড়াশোনা,কাজ, স্বাস্থ্য, খাবার, কোনও পরিষেবাই ঠিক মতো পাচ্ছেন না তাঁরা। এলাকার বাসিন্দা বিনোদ বর্মন বলেন, “কাজ নেই। প্রশাসন যা রেশন দেয় তা দিয়ে চলে না। এ ভাবে কতদিন থাকব?” তাঁদের আরও অভিযোগ, পানিশালার কাছে একটি নদীর ধারে তাঁদের স্থায়ী পুনর্বাসনের জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। ওই জায়গা এতটাই প্রত্যন্ত যে সেখানে থেকে বাজার, হাসপাতাল কোনও জায়গায় কম সময়ে পৌঁছনো যাবে না। অন্য জায়গায় পুনর্বাসন চান তাঁরা। তপশিলি শংসাপত্র, জন্মের শংসাপত্র দেওয়ারও দাবি করেন।
ত্রাণ শিবিরের আরেক বাসিন্দা বিপুলচন্দ্র বর্মন বলেন, “আমাদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ পারে আনা হয়েছিল। এখন তো দেখছি কিছুই পাচ্ছি না। কষ্ট আরও বেড়ে গিয়েছে। হয় আমাদের প্রতিশ্রুতি পালন করুক সরকার নতুবা আমাদের ফেরত পাঠানো হোক।” এ দিন বাম ও বিজেপির নেতারা আন্দোলনকারী বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করেন। বিজেপি নেতা দধিরাম রায় বলেন, “বাসিন্দারা কেন বঞ্চিত হচ্ছেন আমরা তার জবাব চাই।” প্রাক্তন বিধায়ক বাম নেতা পরেশ অধিকারী বলেন, “কেন্দ্র ও রাজ্য প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। এটা চলতে পারে না।”