সখা: স্কুলে ফেরা। নিজস্ব চিত্র
কারও চোখে এল জল। কেউ স্কুলের ভিতরে ঢুকেই ফিরে গেলেন পুরনো স্মৃতিতে। চেয়ার-টেবিল, শিক্ষকদের কথা বার বার ঘুরেফিরে আসছিল তাঁদের কথায়। ছেলেবেলার মতো ঠাট্টা-ইয়ার্কিতেও মেতে উঠলেন ওঁরা। সবাই এখন অবসরপ্রাপ্ত। শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ কোচবিহার জেনকিন্স হাইস্ক্লুলে জড়ো হয়েছিলেন এমনই প্রায় চল্লিশ জন ছাত্র। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে আলাদা আলাদা বিভাগে পড়াশোনা করে নানা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হন তাঁরা। সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফের যোগাযোগ গড়ে ওঠে তাঁদের। সেখান থেকেই স্কুলে এক দিনের জন্য ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা।
কলকাতা থেকে এসেছেন দিবাকর গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। গাজিয়াবাদ থেকে এসেছেন সমীরণ বর্মন, বিজয়ওয়াড়া থেকে তপনজ্যোতি ভট্টাচার্য়, কলকাতা থেকে মানস পাকড়াশি থেকে শুরু করে অরুণাভ দে, আব্দুল হাকিম খান, আবু এরশাদ থেকে শুরু করে কোচবিহারের আশিস সরকার, সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়, অরবিন্দ ভট্টাচার্য। আরও অনেকে।
সুদীপ্তবাবু বললেন, “শিক্ষকদের খুব ভয় পেতাম। প্রত্যেকে যেমন ভালবাসতেন, শাসনও করতেন। আমাদের প্রধান শিক্ষক তখন কালীপদ মুখোপাধ্যায়। তিনি জোরে কথা বললে কোথাও পিন পড়ার আওয়াজ পাওয়া যেত না।’’ বাংলার শিক্ষক মৃণালকান্তি দাস, পদার্থবিদ্যার মোহিত কুণ্ডু, সত্যেন লাহিড়ী সহ নানা শিক্ষকের কথা বলতে বলতে হারিয়ে যাচ্ছিলেন প্রত্যেকে।
স্কুল ছাড়ার পরে উচ্চশিক্ষা নিয়ে প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। কেউ চিকিৎসক, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ সরকারি ক্ষেত্রে উচ্চপদস্থ আধিকারিক হয়েছেন। তবে কেউই ভুলে যাননি স্কুল ও শহরকে। দিনহাটা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন আশিস সরকার। তিনি বললেন, “আমরা চারদিন ধরে একসঙ্গে সময় কাটানোর পরিকল্পনা করেছি। স্কুলে যাওয়া। শহর ঘুরে দেখা। কী যে ভাল লাগছে বলে বোঝাতে পারব না।” অরবিন্দবাবু বলেন, “অনেকেই ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাঁদের কথাও মনে পড়ছে খুব।”