প্রতীকী ছবি।
যে ভাবে কমিটি গড়ে বিধানসভা, লোকসভা, পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করা হয়, সে ভাবেই সমবায় ভোটের জন্য ‘সঞ্চালনা’ কমিটি গড়ার নির্দেশ পাঠাল বিজেপি। গত ৫ ডিসেম্বর দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দলের সর্ব ভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার উপস্থিতিতে বিশেষ বৈঠক হয় বলে নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। বৈঠকে রাজ্যের জন্য বিশেষ কর্মসূচি তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সমবায় ক্ষেত্রের ভোটের জন্যও ‘নির্বাচনী সঞ্চালনা কমিটি’ গড়তে হবে। সে কমিটি বিধানসভা বা পঞ্চায়েত ভোটের মতো সমবায় ভোটেরও দেখভাল করবে। পূর্ব মেদিনীপুরে বামেদের সঙ্গে ‘সমঝোতা’ করে একটি কৃষি সমবায় সমিতিতে দলীয় প্রতীক ছাড়া লড়ে জয় পেয়েছেন বিজেপি মনোনীত প্রার্থীরা। তার পরে, এই নির্দেশি্কাকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিজেপির অন্দরে এই নির্দেশিকা নিয়ে খানিকটা বিস্ময়ও তৈরি হয়েছে। এ রাজ্যে এত দিন সমবায় নিয়ে দল মাথা না ঘামালেও হঠাৎ এখন কেন, এ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সূত্রের দাবি, ২০১১-এ রাজ্যের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের দু’বছর আগে থেকে স্কুল পরিচালন সমিতির ভোটে বাম-বিরোধীরা জয় পেতে শুরু করেছিলেন। বিজেপির একাংশের দাবি, সমবায়ের মতো ক্ষেত্রে, যেখানে অনেক মানুষ জড়িত থাকেন, সেগুলিতে জয় পেলে, বড় ভোটে জনমত প্রভাবিত করা সহজ হয়। জলপাইগুড়ি জেলার সমবায়গুলিতে আগামী বছর মার্চ থেকে ভোট হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে সমবায় ভোটও হতে পারে জেলায়।
জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘নানা কর্মসূচি রূপায়ণের নির্দেশ এসেছে। সমবায় এত দিন তৃণমূল জোর করে দখল করে রেখেছে। মানুষ প্রতিবাদ করছেন। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন।’’
জলপাইগুড়ি জেলায় দু’শোর মতো কৃষি সমবায় সমিতি রয়েছে। আছে চারশোর মতো সমবায় সমিতি। সেগুলির বেশির ভাগ তৃণমূলের দখলে। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কও তৃণমূলের দখলে। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘একে বলে গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল! বিজেপি জলপাইগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গেই ক্রমাগত ক্ষয়ে যাচ্ছে। এখন সমবায়ে নজর দিতে গেলে যেটুকু ছিল, তা-ও হারাবে। সব সমবায়েই তৃণমূলের গরিষ্ঠতা রয়েছে।’’
কেন্দ্রীয় বিজেপির পাঠানো নির্দেশিকায় জেলায় ‘ডেটা এন্ট্রি’র ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। জেলার নানা তথ্য জেলায় একত্রিত করে রাজ্যের ‘কল সেন্টারে’ পাঠাতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশিকা বিষয়ে বিজেপির এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় দলের আইটি সেল মজবুত করতে বলা হয়েছে।’’