টিএমসিপি-র নেতৃত্বে অধ্যক্ষ ঘেরাও

এক পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে টিএমসিপির নেতৃত্বে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার হলে পাশের বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার অপরাধে ওই পরীক্ষার্থীর খাতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সোমবার আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে। বুধবার মালদহের সামসি কলেজে তার জেরে টিএমসিপির নেতৃত্বে বিক্ষোভের দেখানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৪:৪৬
Share:

এক পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে টিএমসিপির নেতৃত্বে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার হলে পাশের বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার অপরাধে ওই পরীক্ষার্থীর খাতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সোমবার আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে। বুধবার মালদহের সামসি কলেজে তার জেরে টিএমসিপির নেতৃত্বে বিক্ষোভের দেখানো হয়।

Advertisement

কলেজ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাজল কলেজের ইংরেজি অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ওই পরীক্ষার্থীর নাম সুধা বর্মন (২২)। তাঁর বাড়ি গাজলে। এ বার গাজল কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছে সামসি কলেজে। বিবাহিত ওই পরীক্ষার্থী অন্ত্বঃসত্ত্বা ছিলেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভের পর ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামার বলেও হুমকি দিয়েছে টিএমসিপি। যদিও ওই ছাত্রী টুকলি করায় নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে।

সামসি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রলয়কান্তি ঘোষ বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কিন্তু পরীক্ষা হলে কেউ টুকলি করলে পরিদর্শক তা দেখে তো চুপ করে থাকতে পারেন না। তবু আমরা যথেষ্ট সংবেদনশীল। খাতা নেওয়া হলেও ওই পরীক্ষার্থীর খাতা বাতিল করা হয়নি। বাকি পরীক্ষা সে দিতে পারবে বলে জানানোও হয়েছিল।”

Advertisement

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর টুকলি করাকে ঘিরে চাঁচল কলেজে তুলকালাম কাণ্ডের পর ওই কলেজ থেকে এ বার পরীক্ষাকেন্দ্রই তুলে দেওয়া হয়েছে। কেন টোকাটুকিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, সেই অভিযোগ তুলে কলেজে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র ছিঁড়ে ফেলে পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া-সহ কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। গত বছরের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে জন্য কলেজগুলিতে কড়া নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে।

সামসি কলেজের ছাত্র সংসদ টিএমসিপির দখলে। টুকলি করছিল বলেই সুধা বর্মনের খাতা নেওয়া হয়েছিল বলে কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি। তার পরেও ওই ঘটনায় টিএমসিপির ভূমিকা নিয়ে শিক্ষক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। তবে কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ বলেন, “পরীক্ষার্থীরাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। আমরাও টুকলির বিরোধী। কিন্তু ওই পরীক্ষার্থী টুকলি করেননি। কথা বলায় ওর খাতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।”

মৃতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছর পাকুয়াহাটে সুধার বিয়ে হয়েছিল। পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী ছিলেন সুধা। বিয়ের পর বাপের বাড়ি গাজলের সুকান্তপল্লিতে থেকে পড়াশোনা করতেন। সোমবার কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে তিনি কাউকে কিছু জানাননি। বিকেলে এক বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছি বলে বেরিয়ে যান। পরে এক সময়ে বাড়িতে ফিরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সুধার জামাইবাবু দিব্যেন্দু রায়ের দাবি, “ওঁর বন্ধুদের কাছেই শুনেছি, কথা বলায় খাতা কেড়ে নেওয়ার পর আর তা দেওয়া হয়নি। তাতেই ও ভেঙে পড়েছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন