হামলার আশঙ্কায় পুলিশের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের এক কাউন্সিলর। পুলিশ সূত্রের খবর, অজ্ঞাতপরিচিত কতিপয় যুবকের বিরুদ্ধে সোমবার বালুরঘাট পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শঙ্কর দত্ত থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন। চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহাকেও তিনি বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। শঙ্করবাবুর বক্তব্য, ‘‘কারা, কী উদ্দেশ্যে আমার উপর হামলার চেষ্টা করছে বুঝতে পারছি না। তবে আশঙ্কা করছি।’’ আবার দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে এমন হতে পারে বলেও মানতে চাননি তিনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৫ মার্চ রাতে বাড়ি ফেরার পথে বাইক আরোহী কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক তাঁকে তাড়া করে বলে শঙ্করবাবু থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। রবিবার রাতে ফের কয়েক জন দুষ্কৃতী মুখে কাপড় বেঁধে তার বাড়ির সামনের রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে দেখে বাড়ির লোকেরা তাঁকে ফোনে সাবধান করলে তিনি পরে লোকজন নিয়ে বাড়ি ফেরেন বলে আবার থানায় অভিযোগ করেছেন। পুরসভার চেয়ারপার্সন চয়নিক লাহা বলেন, ‘‘শঙ্করবাবুর অভিযোগপত্র পেয়েছি। কিন্তু কোনও কারণ উল্লেখ না করায় আমরাও কিছু বুঝে উঠতে পারছি না কেন এমন অভিযোগ তিনি করলেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দেখব।’’ বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হামলার আশঙ্কায় কাউন্সিলর শঙ্করবাবু নিরাপত্তার অভাব বোধ করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
বালুরঘাটে শাসক দলেরই এক কাউন্সিলর হামলার আশঙ্কা করে একাধিকবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরেও পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সেই অভিযোগে তৃণমূলের একাংশ ক্ষুব্ধ। জেলাপুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
কাউন্সিলর শঙ্করবাবু দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বালুরঘাটের বিধায়ক তথা পূর্তমন্ত্রী শঙ্করবাবুর মোবাইল বন্ধ থাকায় প্রতিক্রিয়া মেলেনি। দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘এর আগে ওঁর উপর হামলার চেষ্টা হয়েছিল। ফের হামলার চেষ্টার বিষয়টি জানি না। খোঁজ নেব।’’ দলীয় সূত্রের খবর, পাড়ায় যে কোনও সমস্যা কিংবা বিবাদ মেটাতে শঙ্কররবাবু এগিয়ে এসে সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেন। কয়েক মাস আগে একটি মারপিটের ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়েছিল বলে অভিযোগ। বিবাদের জেরে দলের সহকর্মী কাউন্সিলরকে চড় মারার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। রাস্তা সংস্কার কিংবা নর্দমা তৈরির বরাত নিয়েও শঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে কিছু লোকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বলে শোনা গিয়েছে।
কাউন্সিলর শঙ্করবাবু অবশ্য এ সব মানতে চাননি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘মোটরবাইক নিয়ে ওরা তাড়া করেছিল। সে সময় পাশের পাড়ায় এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পাই। পরে পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে। রবিবারও হামলার ছক ছিল। কিন্তু কেন বুঝতে পারছি না। কারও সঙ্গে তো আমার গোলমাল নেই।’’