দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে দাঁড়ানো তিন কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। দলীয় সূত্রের খবর, বহিষ্কৃত নির্দল প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন গৌতম বরুয়া। গৌতমবাবু কোচবিহার পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী। তিনি ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর। দল প্রথমে প্রার্থী হিসেবে গৌতমবাবুর নাম ঘোষণা করে। পরে তাঁকে বাদ দিয়ে প্রবাল গোস্বামীকে প্রার্থী করা হয়। কোচবিহার পুরসভারই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন এক তৃণমূল কর্মী। ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন অন্তরা বসু। এ দিন কোচবিহার সুকান্ত মঞ্চে এক জনসভায় তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দলের প্রার্থীদের হয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। দলের কর্মী হয়েও যাঁরা ভোটে নির্দল হয়ে দাড়িয়েছেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হল।’’ সেই সঙ্গেই পার্থবাবুর হুঁশিয়ারি, ‘‘আর কোন নেতা কী করছেন, সেদিকেও আমরা নজর রাখছি। শুধু মুখে ঐক্যের কথা বললে হবে না। কাজ করে দেখাতে হবে। না হলে দল তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে।”
দলের মহাসচিবের ওই ঘোষণাকে অবশ্য কটাক্ষ করেছেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “আমি বিদায়ী কাউন্সিলর। তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদও আমার নেই। তা হলে আর বহিষ্কারের কী আছে?’’ তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ আমাকে চান, তাই নির্দল হয়ে ভোটে লড়ব।”
পুর নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগে থেকেই তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠে কোচবিহার জেলায়। জেলার চার পুরসভা কোচবিহার, দিনহাটা, তুফানগঞ্জ এবং মাথাভাঙায় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে ওই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। কোচবিহার জেলা কোর কমিটির একাধিক বৈঠকেও ওই সমস্যার সমাধান হয়নি। কলকাতায় তৃণমূলের অফিসে বৈঠক করে সব গোষ্ঠী থেকে প্রার্থী বেছে নিয়ে দ্বন্দ্ব সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রের খবর, তার পরেও জেলায় দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ গোষ্ঠী এবং বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদের গোষ্ঠীর বিরোধ রয়েছে। দলীয় স্তরে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
প্রকাশ্যে অবশ্য কেউই ওই অভিযোগ মানতে নারাজ। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কোনও গোষ্ঠী বিরোধ নেই। আমরা সবাই মিলে এক সঙ্গে কাজ করছি। যারা এর বাইরে রয়েছেন, তাঁদের বার্তা দিয়েছেন মহাসচিব। আশা করছি কেউই দলের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করবে না। আমরা সব আসনে জয়ী হব।” বনমন্ত্রী বলেন, “ওয়ার্ড স্তরে দুই-একটি জায়গায় সমস্যা রয়েছে। যারা ওই সমস্যা তৈরি করেছেন, তাঁদের সতর্ক করেছেন মহাসচিব। এর পরে আর ওই সমস্যা থাকবে না বলেই মনে করছি।”