ক্ষুব্ধ: দিনহাটায় পথ অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
সভার বিষয় এক। মাঠও এক। সেখানেই যুব তৃণমূল সভা করার একদিনের মধ্যে সভা করল মূল তৃণমূল।
সোমবার কোচবিহারের চান্দামারিতে বাজারের কাছে একটি মাঠে সভা হয় তৃণমূলের। উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী, তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামী দলের নেতা খোকন মিয়াঁ। ওই একই মাঠে রবিবার সভা করেছিল যুব তৃণমূল। সেখানে জেলার যুব সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়, বিধায়ক মিহির গোস্বামী উপস্থিত ছিলেন। একই মাঠে পরপর দুই সভায় প্রকাশ্যে এসেছে শাসক দলের অন্দরের টানাপড়েন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রবিবার রাতে চান্দামারিতে দফায় দফায় বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। এর জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
এ দিন সিতাইয়েও তৃণমূলের সভা হয়। ওই সভায় সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়ার সঙ্গে উপস্থিত ছিলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সেখানেও দিন কয়েক ধরে যুব ও মূল তৃণমূলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য দ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “একাধিক এলাকায় কিছু দুষ্কৃতী অশান্তি করার চেষ্টা করছে। পুলিশকে সব জানানো হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। দলে দ্বন্দ্ব নেই। কর্মীরা একসঙ্গেই কাজ করছেন।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ও দ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, নানা জায়গায় দলের সঙ্গে যুব-সহ নানা শাখা সংগঠনের কর্মসূচি চলছে। তাঁর দাবি, “একাধিক সভা হলেই দ্বন্দ্ব নয়।”
দলীয় সূত্রের খবর, ৮ জানুয়ারি কোচবিহারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে। সেই সভাকে কেন্দ্র করে মূল তৃণমূল ও যুব তৃণমূল প্রচারে নেমেছে। তাতেই দ্বন্দ্ব জোরালো হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই কোচবিহারে যুব ও তৃণমূলের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। গুলি-বোমায় দুই পক্ষের লড়াই নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। দু’পক্ষের লড়াইয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে। জখম হন অনেকে। রাজ্য নেতৃত্ব বার বার তা নিয়ে বার্তা দিলেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৯ অক্টোবর কোচবিহারে এসে তা নিয়ে দলীয় নেতাদের সতর্ক করলেও গণ্ডগোল কমেনি। এখন প্রচার নিয়ে দুইপক্ষ এলাকা নিজেকদের দখলে আনার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ।
রবিবার চান্দামারিতে যুব তৃণমূলের সভার পরে রাতভর বোমাবাজি হয়। আতঙ্কে সোমবার বাজারের অনেক দোকান বন্ধ ছিল। সন্ধে নামতেই লোকজন বাড়ি চলে যাচ্ছেন। কয়েকজন বাসিন্দার কথায়, “এখানে নিরাপত্তা প্রয়োজন। দু’পক্ষের লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের যেন ক্ষতি না হয় তা দরকার।” তৃণমূলের কোচবিহার ১ নম্বর ব্লক সভাপতি খোকন মিয়াঁ বলেন, “কোনও ভাবেই শান্তি বিঘ্নিত হতে দেব না আমরা। কোনও দুষ্কর্ম হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”