মালদহে ৫টি ত্রিশঙ্কু তৃণমূলের

তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ত্রিশঙ্কু থাকা সমস্ত পঞ্চায়েতেই ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল। যদিও দল ভাঙনে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ভয়, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২৮
Share:

মালদহ জেলায় ৫টি ত্রিশঙ্কু হয়ে থাকা বোর্ড তৃণমূলের দখলে চলে গেল।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহে এ বারে ব্যাপক ভরাডুবি ঘটেছে কংগ্রেসের। অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে বামেদেরও। এমন অবস্থায় কংগ্রেসের জেলার শীর্ষ নেতৃত্বদের তৃণমূলের যোগদানের জল্পনা চলছে মালদহের রাজনীতিতে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কংগ্রেস সহ বিরোধী সদস্যদের ভাঙিয়ে ত্রিশঙ্কু থাকা পঞ্চায়েতগুলো একক ভাবে দখল করতে আসরে নেমেছে তৃণমূল। সোমবার রাতে কালিয়াচক ২ ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে আট জন বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে জেলার পাঁচটি ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েত দখল নিয়ে তৃণমূল।

Advertisement

তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ত্রিশঙ্কু থাকা সমস্ত পঞ্চায়েতেই ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল। যদিও দল ভাঙনে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ভয়, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। প্রশাসনের অন্দরে ব্যস্ততার পাশাপাশি ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েতগুলো দখলে ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তার মধ্যে ৫৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতই একক ভাবে পেয়েছে তৃণমূল। শুধু গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেই নয়, ত্রিস্তরেই কংগ্রেসের শক্ত মাটিতে ফুটেছে ঘাসফুল। জেলা পরিষদ একক ভাবে দখল করেছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে জেলার ১৫টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে তৃণমূলের ঝুলিতে রয়েছে ন’টি। তৃণমূলের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। তবে কংগ্রেস এবং বামেদের অস্তিত্ব একেবারে সঙ্কটে। বাম ও কংগ্রেস আসন সমঝোতা করে লড়াই-এর পরেও শোচনীয় ফল হয়েছে। পঞ্চায়েতে খারাপ ফল হতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বদের। জোর জল্পনা রয়েছে জেলার কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতৃত্বরা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।

Advertisement

ইতিমধ্যে মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন সহ দুই বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে শীর্ষ নেতৃত্বের যোগদানের জল্পনা আরও বাড়িয়েছে দলের অন্দরেই। আর তাতেই কার্যত দিশাহারা কংগ্রেসের নিচুতলার পঞ্চায়েত সদস্যেরা। এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, “আমাদের ক্যাপ্টেনরা যদি দলবদল করে চলে যান, তা হলে আমাদের মামলা খেয়ে থেকে যাওয়ার মানে নেই।”

এ দিন রাতে কালিয়াচক ২ ব্লকের বাঙিটোলা এবং উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে আট জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল সরকার। ওই ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত, গাজল ব্লকের বৈরগাছি ১ ও ২, পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু থেকে তৃণমূলের দখলে গিয়েছে।

দুলালবাবু বলেন, “বিরোধী সদস্যেরা উন্নয়নের স্বার্থে নিজে থেকেই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “বিরোধীদের মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। জোর করে তৃণমূলে যোগদান করানো হচ্ছে।” কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, “কর্মীরা থাকলেই দল চলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন