দু’দশকেরও বেশি সময়ের পুরোনো মামলায় গ্রেফতার এড়াতে জলপাইগুড়ি দায়রা আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন তৃণমূল কৃষক সংগঠনের রাজ্য কমিটির আহ্বায়ক প্রবাল রাহা। শুক্রবার দুপুর নাগাদ মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে আত্মসমর্পণ করে প্রবালবাবু জামিনের আবেদন জানান। বিচারক তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেন।
১৯৯২ সালের ২৬ জানুয়ারি তিনবিঘা হস্তান্তরের বিরোধিতায় শহরের কদমতলায় আন্দোলনে নেমে মামলায় জড়িয়ে পড়েন প্রবালবাবু। প্রবালবাবু সহ আরও চারজনের বিরুদ্ধে মারপিট, ষড়যন্ত্র, হামলার অভিযোগ এনে ১৪৭, ৩৩৬, ৩২৩ এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ওই সময় প্রবালবাবু সমাজতান্ত্রিক ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে ফরওয়ার্ড ব্লকে চলে যান এবং দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন। ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রবালবাবু তাঁর অনুগামীদের নিয়ে ফরওয়ার্ড ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি জানান, ১৯৯৩ সালে পুলিশ আদালতে মামলার চার্জশিট পেশ করে। এর পরে কিছু জানতেন না। কিছুদিন আগে শোনেন ওই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। এর পরে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন।
এদিন প্রবাল বাবু তাঁর আইনজীবী চিন্ময় রায়কে সঙ্গে নিয়ে আদালতে পৌঁছে যান। আইনজীবী বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। আমার মক্কেলের প্রশ্ন কেন তিনবিঘা এলাকা বাংলাদেশকে লিজে দেওয়া হল। এটা আন্তর্জাতিক ইস্যু। কাজটা সত্যি ঠিক হয়েছে কিনা সেটা বেরিয়ে আসা জরুরি।” তিনি জানান, আদালতে বিষয়টি উল্লেখ করে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক সেটা মঞ্জুর করেছে। আদালত থেকে বেড়িয়ে প্রবালবাবু জানান, এখনও তিনি মনে করেন তিনবিঘা হস্তান্তর ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। প্রয়াত কৃষিমন্ত্রী সঠিক কারণে বিরোধিতা করেছেন। তাঁর কথায়, “তিনবিঘা হস্তান্তর বিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার জন্য আজও গৌরব অনুভব করি। ভারত ও নেপালের মতো তিনবিঘা দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা যেতে পারত। কিন্তু ১৯৯২ সালের ২৬ জানুয়ারি বর্তমান বামফ্রন্টের নেতারা ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। কদমতলায় আমাদের ধিক্কার সভায় ঢিল ছুড়ে বামফ্রন্ট নেতারা পুলিশকে দিয়ে উল্টে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার ব্যবস্থা করেন।” আইনজীবী চিন্ময় রায় জানান, ওই মামলায় অভিযুক্ত এসইউসিআই নেতা তরুণ ভৌমিক প্রয়াত হয়েছেন। জয়দেব মণ্ডলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।