Ratua

নেতার মুখে লঙ্কা-জল, পাল্টা ‘হামলা’

দলের যুব সভাপতির মুখে লঙ্কাগুড়ো মেশানো জল ছুঁড়েছেন তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্যা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি

দলের যুব সভাপতির মুখে লঙ্কাগুড়ো মেশানো জল ছুঁড়েছেন তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্যা। পাল্টা সঙ্গীদের নিয়ে তাঁর বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন ওই যুব নেতা— এমনই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ ঘিরে তেতে উঠেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর।

Advertisement

কয়েক দিন আগে ওয়াকফ বোর্ডের জমি থেকে গাছ কাটার অভিযোগ ঘিরে রতুয়ায় ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ ছড়ায়। তা গড়ায় থানা-পুলিশ পর্যন্ত। শনিবার রাতে হরিশ্চন্দ্রপুরেও ওই ঘটনার জের গড়িয়েছে থানায়।

অভিযোগ, জেলা পরিষদ সদস্য মমতাজ বেগমের ছোঁড়া লঙ্কাগুড়ো মেশানো জল মুখে পড়ার পরে যন্ত্রণায় বেহুঁশ হয়ে যান দলের যুবনেতা মনোতোষ ঘোষ। পুলিশ তাঁকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। চিকিৎসকেরা জানান, আপাতত তিনি কিছুটা সুস্থ হলেও চোখ এখনও ফুলে রয়েছে।

Advertisement

তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, মার্চের প্রথম সপ্তাহে মালদহে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তার আগে ফের হরিশ্চন্দ্রপুরে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ এ ভাবে ফের প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছেন দলীয় নেতৃত্ব।

চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি মনোতোষ তৃণমূল নেতা তজমুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। জেলা পরিষদ সদস্যা মমতাজ বেগমের স্বামী আমিনুল হক তাঁদের ‘বিপক্ষ’ গোষ্ঠীর।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। মমতাজের ছেলে দলের এক নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটি পোস্টে বিরূপ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাতেই মমতাজের বাড়িতে হাজির হন দলের এক যুব নেতা। পরে যান মনোতোষ-সহ আরও কয়েক জন। অভিযোগ, ওই সময়েই দু’পক্ষে গোলমাল শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

মমতাজের কথায়, ‘‘সামান্য একটা ঘটনা। ছেলেকে বলার পরে ওই পোস্ট মুছেও দেয়। তার পরেও ওরা পাইপগান, ধারাল অস্ত্র নিয়ে আমাদের খুন করতে বাড়িতে চড়াও হয়। দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। পুলিশ আসায় রক্ষা পাই।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘পুলিশ আসার পরেও মনোতোষ বাড়িতে ঢুকে আমাকে ও স্বামীকে গালিগালাজ করতে থাকে। আমি রান্নাঘরে ছিলাম। হঠাৎ আমার দিকে তেড়ে আসতে নিজেকে বাঁচাতে হাতের সামনে থাকা পাত্রের জল ওঁর দিকে ছুঁড়ে দিই। রান্নার সময় হাত জলে ধুঁয়েছিলাম। তাতে মশলা মিশে থাকতে পারে। এর বেশি কিছু নয়।’’

মনোতোষের অভিযোগ, দলের এক কর্মী আমিনুলকে তাঁর ছেলের ফেসবুকে পোস্ট করা মন্তব্যের কথা জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওঁরা ঘাড়ধাক্কা দিয়ে তাঁকে বের করে দেন। ফোনে তা শোনার পরে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে ওই বাড়িতে যাই। আচমকা আমার মুখে লঙ্কাগুড়ো মেশানো জল ছোড়া হয়। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এখনও চোখে ভালো দেখতে পাচ্ছি না।’’ তাঁর নালিশ, এখন উল্টে তাঁদের বিরুদ্ধে আগ্নোয়াস্ত্র নিয়ে হামলার অভিযোগ করা হচ্ছে।

হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তজমুল হোসেন অবশ্য এই প্রসঙ্গে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি হজরত আলিও বলেন, ‘‘কী হয়েছে তা ঠিক ভাবে না জেনে মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন