সব ব্লকে ভাঙা হল কমিটি, ক্ষুব্ধ আদি-রা

সবে ২৮ জানুয়ারি তৃণমূল যোগ দেন মৌসম নুর। সেই দিনই তাঁকে মালদহ উত্তর কেন্দ্রে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মালদহ শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩২
Share:

মৌসম বেনজির নুর। ফাইল চিত্র।

মালদহে তৃণমূলের সব ক’টি ব্লক কমিটি ভেঙে দেওয়া হল। পরিবর্তে ব্লকে ব্লকে দলীয় সাংগঠনিক কাজ পরিচালনায় ছোট অস্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদিও ইংরেজবাজার ব্লক ও শহর কমিটি এ দিন প্রকাশ করা হয়নি। দলের মালদহ জেলা পর্যবেক্ষক মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে ও জেলা সভাপতি মৌসম নুরের সই করা এই অস্থায়ী কমিটিগুলি প্রকাশ্যে আসতেই দলের অন্দরে বিক্ষোভ চরমে ওঠে। দলেরই একাংশের অভিযোগ, জেলা স্তর ও শাখা সংগঠনের নেতৃত্বদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এই ব্লক কমিটিগুলি গঠন করা হয়েছে। ওই অংশের আরও দাবি, তৃণমূলের পুরনো নেতা-কর্মীরা বেশিরভাগই এই কমিটিতে ঠাঁই পাননি। তার বদলে কংগ্রেস থেকে আসা নবাগতদের সংখ্যাই বেশি।

Advertisement

সবে ২৮ জানুয়ারি তৃণমূল যোগ দেন মৌসম নুর। সেই দিনই তাঁকে মালদহ উত্তর কেন্দ্রে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে অবশ্য বিজেপির প্রার্থীর কাছে হেরে যান মৌসম। তার পরে মোয়াজ্জেম হোসেনকে জেলা কমিটির চেয়ারম্যান করে মৌসমকে জেলা সভাপতি করেন মমতা। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলে আসা কংগ্রেসি বিধায়ক সময় মুখোপাধ্যায়কেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ দিন কলকাতায় বসে জেলা পর্যবেক্ষক মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের সঙ্গে আলোচনার পরে ব্লক কমিটিগুলি ভেঙে দেন মৌসম। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ১৫টি ব্লকে নতুন করে অস্থায়ী কমিটি ঘোষণা করা হয়।

দ্বন্দ্ব কতটা, উঠে এল তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার কথায়। রতুয়া-১ ব্লক কমিটির সভাপতি ছিলেন ফজলুর রহমান। ব্লকে নয়া যে সাত জনের কমিটি করা হয়েছে, তাতে তিনি নেই। অন্যান্য ব্লকে জেলা পরিষদের সদস্যদের কমিটিতে ঠাঁই দেওয়া হলেও এই ব্লকে তা হয়নি। ফজলুরের অভিযোগ, ‘‘এই কমিটি অনৈতিক। আমি এই কমিটি মানি না। বিষয়টি নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানাব।’’

Advertisement

কালিয়াচক ২ ব্লক-এ ৯ জনের যে কমিটি হয়েছে, তাতে ঠাঁই পাননি প্রাক্তন সভাপতি আসাদুল আহমেদ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই কমিটি কার্যত কংগ্রেসের কমিটি। নয়া কমিটিতে যে হাসিমউদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, তিনি এখনও কাগজে-কলমে রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য।’’ তিনিও বলেন, ‘‘এই কমিটি নিয়ে আমরা রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বকে অভিযোগ জানাব।’’

মানিকচক ব্লক কমিটিতে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে চেয়ারপার্সন করা হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকে। সাবিত্রী বলেন, ‘‘কমিটি গঠন নিয়ে কোনও আলোচনা করা হয়নি।’’ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি মানব বন্দোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘ব্লকে ব্লকে নতুন কমিটি গঠন নিয়ে আমরা অন্ধকারে।’’ মৌসম অবশ্য বলেন, ‘‘ব্লকে ব্লকে নতুন যে অস্থায়ী কমিটিগুলি গঠন করা হয়েছে, সেগুলি নিয়ে যদি কারও ক্ষোভ থাকে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। নতুন এই কমিটি অঞ্চল সভাপতি নির্বাচিত করবেন। সে জন্য অঞ্চলে গিয়ে প্রতিটি বুথ থেকে পাঁচ জন করে নাম নিয়ে অঞ্চল কমিটি গঠন করবেন তাঁরা। যাঁরা এলাকায় জনপ্রিয়, তাঁরাই কমিটিতে আসবেন। সকলকে সন্তুষ্ট করা যাবে না।’’

এ দিকে, জেলা তৃণমূল প্রকাশিত পদাধিকারীদের তালিকায় সাধন পাণ্ডের সইয়ের নীচে তাঁর মন্ত্রী হিসেবে ‘সিল’ থাকায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে মন্ত্রীর বারবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন তোলেননি। তাই তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন