দলেরই সাংসদকে হেনস্থা টিএমসিপির

কলেজ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলে বিক্ষোভ ওঠে৷ কিন্তু অধ্যক্ষের ঘরে সবাই আলোচনায় বসেন। কিন্তু তাতেও দু’পক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতে থাকে৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

সাংসদকে ঢুকতে বাধা পড়ুয়াদের। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বারবার বলেছেন শিক্ষাঙ্গনে গোলমাল বরদাস্ত করবেন না। একই কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তারপরেও জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজে টিএমসিপির বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূলেরই সাংসদ বিজয় বর্মন।

Advertisement

এই কলেজে ছাত্র সংসদে রয়েছে টিএমসিপিই। বুধবার কলেজের পরিচালন সমিতির সভা ছিল। সমিতির সভাপতি সাংসদ বিজয়বাবু। ওই সভায় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবজিৎ সরকারকে কেন ডাকা হয়নি, তা নিয়েই সকাল থেকে কলেজে উত্তেজনা ছিল। দুপুর বারোটা থেকে সাংসদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন টিএমসিপি সমর্থকরা৷ তারই মধ্যে দু’টো নাগাদ কলেজে পৌঁছন বিজয়বাবু৷ গাড়ি থেকে নেমে অধ্যক্ষের ঘরের দিকে যেতেই বারান্দায় তাঁকে আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কিছু টিএমসিপি সমর্থক৷ বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন দেবজিৎই৷ সাংসদ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকও বোঝানোর চেষ্টা করে পারেননি। দেবজিৎরা দাবি জানান, ‘‘বিজয়বাবু কলেজে এসে রাজনীতি করছেন।’’ দেবজিৎকে ছাড়া পরিচালন সমিতির বৈঠক হবে না বলেও দাবি করতে থাকেন তাঁরা। শেষে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলে বিক্ষোভ ওঠে৷
কিন্তু অধ্যক্ষের ঘরে সবাই আলোচনায় বসেন। কিন্তু তাতেও দু’পক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতে থাকে৷

কেন দেবজিৎকে পরিচালন সমিতি থেকে বাদ দেওয়া হল? অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের দাবি, ‘‘উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ সংক্রান্ত নীতি অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর ছাত্র সংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে৷ তাই তাঁকে ডাকা হয়নি।’’ বিকাশ ভবন সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, ৩১ জানুয়ারি ছাত্র সংসদগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে সে সংক্রান্ত কোনও নির্দেশও এখনও পর্যন্ত শিক্ষা দফতর থেকে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

কিন্তু কলেজে এই গোলমাল কেন হল? তৃণমূলের নেতাদের বক্তব্য, দেবজিৎ জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত৷ সাংসদ বিজয়বাবুর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব রয়েছে। সাংসদের কথাতেই দেবজিৎকে বৈঠকে ডাকা হয়নি বলেও অভিযোগ। তবে অধ্যক্ষ রাজ্জাক বলেন, ‘‘দেবজিৎ কলেজ থেকে পাশ করে বেরিয়ে গিয়েছেন। তাঁকে না ডাকার সেটাও কারণ।’’ দেবজিতের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘আগে যিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, তিনি পাশ করার পরেও সাংসদের প্রশ্রয়ে ক্ষমতায় ছিলেন। বৈঠকেও ডাকা হত।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এ নিয়ে পরে মু‌খ খুলতে চাননি। বিজয়বাবু সব দাবিই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। সৈকতবাবুও জানান, ‘‘এ দিন কলেজে কী হয়েছে জানি না৷ ওটা ছাত্রদের বিষয়৷’’ শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, আনন্দচন্দ্র কলেজে এই গণ্ডগোলকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন