ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে অবশেষে পানিট্যাঙ্কির চা বাগানের জমি দখলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নির্দেশ দিল তৃণমূল। রবিবার শিলিগুড়িতে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের বৈঠকে পানিট্যাঙ্কির চা বাগানের জমি দখলের অভিযোগ প্রসঙ্গ ওঠে। বৈঠকে দুই নেতা দাবি করেন, নেতাদের একাংশের কাজকর্মের জন্য পুরো দলের বদনাম হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জেলা নেতৃত্ব চুপ করে বসে থাকলে ভুল বার্তা যাবে বলেও তাঁরা সর্তক করেন। এরপরেই দলের জেলা নেতারা ঠিক করেন, দ্রুত পানিট্যাঙ্কি এলাকাতে জমি দখলের অভিযোগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হবে। নেপাল সীমান্তবর্তী পানিট্যাঙ্কিতে সতীশচন্দ্র চা বাগানের প্রায় ৫ একর জমি বেড়া দিয়ে ঘিরে প্লট করে বিক্রি শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকার বাম-ডান সব দলের কয়েকজন নেতার মদতেই জমি দখল করে বিক্রি শুরু হয় বলে অভিযোগ। জড়িয়ে পড়ে শাসক দলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি থেকে যুব নেতার নাম। জমি দখল করে বিক্রিতে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। প্রশাসন তদন্ত শুরু করার পরে টাকা ফেরত চেয়ে পানিট্যাঙ্কি এলাকার এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে গত শুক্রবার ঘেরাও করেন ব্যবসায়ীদের কয়েকজন।
এ দিন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেন, ‘‘কোনও অসাধু কাজ দল বরদাস্ত করে না। পানিট্যাঙ্কির জমি দখলের অভিযোগে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে বা যারাই জড়িত থাক, নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি।’’ চা বাগানের জমির এক একটি প্লট ন্যূনতম ৩ লক্ষ থেকে দশ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এশিয়ান হাইওয়ে তৈরির জন্য উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য জমি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন এলাকার তৃণমূল নেতাদের কয়েকজন। পুনর্বাসনের কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছে জমি বিক্রির অভিযোগ ওঠে, এমনকী কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জোর করে নিতেও বাধ্য করা হয়। দখলের জমির প্লটের একাংশে আবাসন তৈরি করে চা শ্রমিকদের বিক্রির মতলবও ছিল বলে দাবি। চা বাগানের জমির প্লট এবং কাকে বিক্রি হয়েছে তার তালিকাও প্রশাসনের কাছে পৌঁছয়। কোটি কোটি টাকার লেনদেনের বেশিরভাগটাই নেতাদের কয়েকজনের হাতে গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ দিন তৃণমূলের জেলা নেতাদের বৈঠকেও সে প্রসঙ্গ ওঠে। সূত্রের খবর, তৃণমূলের বাগডোগরার নেতা প্রবীর রায় এবং নকশালবাড়ির নেতা তপন কুণ্ডু বৈঠকে জমি দখলের অভিযোগের প্রসঙ্গ তোলেন। তপনবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘যা বলার দলের বৈঠকেই বলেছি। জেলা নেতৃত্ব তা নিয়েও নির্দেশও দিয়েছেন।’’