আর আট-দশ মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ পৌঁছেছে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা কমিটির কাছে। সেই মতো কোমর বাঁধতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার জলপাইগুড়িতে এক বৈঠকে এই দিনক্ষণ মাথায় রেখেই পরবর্তী সূচি তৈরির উপরে জোর দিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব।
২০১৩ সালের জুলাইয়ে পঞ্চায়েত ভোট হয় রাজ্যে। হিসেব মতো তাই ২০১৮ সালের জুলাইয়ে এই ভোট হওয়ার কথা। কিন্তু দলীয় দফতরে অন্য বার্তা এসেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি সফর নিয়ে দলীয় স্তরে প্রস্তুতি সারতে বুধবার জলপাইগুড়িতে বৈঠকে বসে জেলা নেতৃত্ব। ছিলেন সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীও। দলের এক কর্মীর কথায়, ‘‘বৈঠকে জানানো হয়েছে, এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের গোড়ায় পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে বলে ধরে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।’’
কী প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?
জেলার সব ব্লক ধরে ধরে জেলা নেতাদের বৈঠক করতে বলা হয়েছে। দলের সরাসরি সদস্য না হলেও এলাকার মান্যগণ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা নানা অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান করে তাঁদের সামিল করতে বলা হয়েছে। গ্রামে-গ্রামে রক্তদান, বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কবে কী কর্মসূচি হবে, তার দিনক্ষণ জেলা নেতৃত্ব ঠিক করে দেবেন। অন্দরের বৈঠক নিয়ে বাইরে মুখ খুলতে চাননি জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতারা। সৌরভবাবু শুধু বলেন, ‘‘আমরা সারা বছর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলি। যে কোনও দিন ভোট হলে তৈরি রয়েছি।’’
শুধু জলপাইগুড়ি নয়, উত্তরবঙ্গ জুড়েই তৃণমূলের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। একমাত্র দার্জিলিং জেলা বাদে উত্তরবঙ্গের সর্বত্র একসঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সব জেলাতেই বুথভিত্তিক কর্মিসভা শুরু হচ্ছে বলে দাবি। ভোট এগিয়ে আনার ব্যাখ্যাও শোনা যাচ্ছে তৃণমূল নেতাদের থেকে। গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপি সংগঠন বাড়াতে কাজ শুরু করেছে গোটা রাজ্যে। উত্তর প্রদেশের ভোটে সাফল্যের পরে বিজেপি নেতা-কর্মীরা দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ শুরু করেছেন। শুধু মূল দলই নয়, সব শাখা সংগঠনের বুথ কমিটি গড়ে ফেলেছে বিজেপি। তাই কেন্দ্রের শাসক দলকে বেশি প্রস্তুতির সুযোগ না দিতেই পঞ্চায়েত ভোট এগোনোর সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে দাবি জেলা তৃণমূলে।