শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
নিত্যানন্দপুরের যে মাঠে সভা করে গিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, সেই মাঠেই বুধবার পাল্টা সভা করবেন তৃণমূলের মালদহ জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এ ছাড়া থাকবেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব থেকে শুরু করে তিন রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা, গোলাম রব্বানি ও জাকির হোসেনও। কিন্তু একঝাঁক মন্ত্রী এনে সভা করে তৃণমূল কি বিজেপির সভার ভিড়কে টেক্কা দিতে পারবে? এ নিয়েই এখন জোর আলোচনায় মশগুল মালদহ জেলার রাজনৈতিক মহল।
যদিও বিজেপির সভার ভিড়কে টেক্কা দিতে জেলা জুড়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে তৃণমূল। ব্লক, অঞ্চল তো বটেই এমনকি, বুথস্তর পর্যন্ত মিটিং, মিছিল চলছে সভার সমর্থনে। পাশাপাশি সোসাল মিডিয়াতেও প্রচারের ঝড় তুলেছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা।
এ সবের মাঝে, প্রচার নিয়ে দলীয় দ্বন্দ্বও সামনে উঠে আসছে।
জানুয়ারির ২২ তারিখ দুপুরে পুরাতন মালদহের নিত্যানন্দপুরে জনসভা করেন অমিত। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, সেই সভায় ইদানীং কালের মধ্যে চোখে পড়ার মতো ভিড় হয়েছে। সেই সভায় আদিবাসী মানুষদের পাশাপাশি যুবকদেরও ঢল নামে। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, দু-লক্ষ লোকের সমাগম হয়েছিল সেই সভায়।
পঞ্চায়েতে দলের ব্যাপক সাফল্যের পরেও অমিতের সেই সভা তৃণমূল নেতৃত্বকে লোকসভা ভোটের আগে রীতিমতো চাপে ফেলে দিয়েছে। আর তাই, অমিতের সভার রেশ কাটাতে মরিয়া হয়ে তৃণমূল ওই একই মাঠে বুধবার পাল্টা জনসভার ডাক দিয়েছে।
তৃণমূল সূত্রেই খবর, ইতিমধ্যে দলের সমস্ত জেলা নেতৃত্ব ও ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করা হয়েছে। এবং জেলার ১৫টি ব্লকের মধ্যে ব্লকপিছু বুধবারের সভায় অন্তত ১০ হাজার করে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আসার টার্গেট ব্লক নেতৃত্বদের বেধে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুই শহরেরও কর্মী-সমর্থকদেরও যত বেশি সম্ভব সভায় হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সভায় কর্মীদের আনতে ব্লক, অঞ্চল এমনকি বুথ স্তরে পর্যন্ত মিটিং, মিছিল করা হচ্ছে জোর কদমে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও কর্মীরা সভার প্রচার চালাচ্ছেন। এদিকে প্রচার নিয়ে দলের দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে এসেছে।
যেমন, সভাকে সফল করা নিয়ে শনিবার রাতে জেলা পরিষদের তৃণমূলের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলকে হবিবপুর ব্লকে গিয়ে দলেরই দু’টি গোষ্ঠীর সঙ্গে আলাদা আলাদা জায়গায় গিয়ে বৈঠক করতে হয়। অভিযোগ, শনিবার রাতেই দলীয় দ্বন্দ্বের জেরে হরিশ্চন্দ্রপুরে জখম হন পঞ্চায়েতে সমিতির এক দলীয় সদস্য।
তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার অবশ্য বলেন, “আমাদের সভা বিজেপির সভাকে ছাপিয়ে যাবে। সভায় আসার জন্য কর্মী-সমর্থকরা মুখিয়ে রয়েছেন।” বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র অবশ্য বলেন, ‘‘অমিত শাহের সভায় মানুষের যে ঢল নেমেছিল তা সাম্প্রতিক কালে কোনও সভায় হয়নি।’’ তৃণমূল টেক্কা দিতে পারবে কি না তা ৩০ তারিখই প্রমাণ হবে।