শ্রমিকের পাশে, তবু নয় বন্‌ধ সমর্থন

মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং বলেন, ‘‘আজ, বুধবার বামপন্থী এবং কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনগুলি ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছে। বিজেপি সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা সংগঠনগুলির পাশে আছি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:০৪
Share:

ফাইল চিত্র

শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ভারত বন্‌ধে দার্জিলিং পাহাড় ‘বন্‌ধ বা ধর্মঘট’ শূন্য থাকবে বলে ঘোষণা করলেন মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং। মঙ্গলবার দুপুরে বিনয় জানিয়েছেন, গত ২০১৭ সালে পাহাড়ে ১০৫ দিনের বন্‌ধ চলে। তা তোলার সময় সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, পর্যটক সকলের কথা মাথায় রেখে ঠিক করা হয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন চললেও পাহাড়ে আর কোনও বন্‌ধ হবে না।

Advertisement

মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং বলেন, ‘‘আজ, বুধবার বামপন্থী এবং কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনগুলি ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছে। বিজেপি সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা সংগঠনগুলির পাশে আছি। তবে কিন্তু বন্‌ধ করে নয়। তাই সব দার্জিলিং, কালিম্পংবাসীকে বলছি, ভারত বন্‌ধ পাহাড়ে হচ্ছে না। সবাই জনজীবন স্বাভাবিক রাখুন, সেই অনুরোধই জানাচ্ছি।’’

এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মোর্চার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন বন্‌ধপন্থীরা। সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যে লড়াইয়ে নেমেছি তাতে বিনয় তামাংরা আমাদের পাশে আছেন বলে জানিয়েছেন। তবে পাহাড়ে বন্‌ধের কথা আমরাও বলছি না। দু’বছর আগে পাহাড়ে টানা বন্‌ধ হয়েছে। তাতে অর্থনীতি, পর্যটন-সহ সব ক্ষেত্রেরই ক্ষতি হয়েছিল।’’

Advertisement

বিনয়রা যে বন্‌ধ বিরোধী, তার উদাহরণ অবশ্য সম্প্রতি মিলেছে। সিএএ আর এনআরসি-র বিরুদ্ধে ২৯ ডিসেম্বর ২৪ ঘণ্টার পাহাড় বন্‌ধ ডাকে যুব মোর্চা। দলীয় স্তরে তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিনয়। তবে আন্দোলনে তাদের পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। তার পরেই বন্‌ধ তুলে নেয় যুব মোর্চা। বড়দিন, নতুন বছরের পর্যটন মরসুমে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন ব্যবসায়ী এবং পর্যটকেরা। পরিবর্তে প্রতিবাদ মিছিল হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিনয় নিজেই।

পাহাড়ের রাজনৈতিক দলের অনেক নেতাই মনে করেছেন, বিমল গুরুংয়ের সঙ্গ পুরোপুরি ছেড়ে পাহাড়কে স্বাভাবিক করার শর্তে রাজ্য সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন বিনয়। তাই তাঁর পক্ষে বন্‌ধের সমর্থনে কথা বলা সম্ভব নয়। দলীয় স্তরে তো বটেই অন্য দলের ডাকা বনধেও পাহাড়কে স্বাভাবিক রাখাটা এখন বিনয়ের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে।

দলীয় সূত্রের খবর, ২০১৭ সালে বন্‌ধ নিয়ে বিনয় এবং বিমলের মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হয়। অনীত থাপাকে নিয়ে আলাদা গোষ্ঠী তৈরি করেন বিনয়। এই গোষ্ঠীর প্রথম লক্ষ্য ছিল, পাহাড়কে বন্‌ধ-সংস্কৃতি থেকে মুক্ত রাখা। এটা পাহাড়ের পরিবহণ ব্যবসায়ী, পর্যটন সংগঠনগুলিরও দাবি। বিমলের সময়ে এই দাবি জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাই যুব মোর্চা বন্‌ধ প্রত্যাহার করার পরেই একটি পর্যটন সংগঠনের পক্ষে বিনয়কে ধন্যবাদ জানানো হয়। তিনিও পাল্টা তাঁদের ‘পাহাড় বনধ-শূন্য থাকবে’ বলে ফের আশ্বস্ত করে দেন।

এ দিন বিনয় কেন্দ্রীয় সরকারকে এক হাত নিয়ে শ্রমিক-বিরোধী সরকার বলেও অভিযোগ করেছেন। পাহাড়ের শ্রমিকদের কর্ম সংস্থান, ন্যূনতম মজুরি বা সামাজিক সুরক্ষায় বিজেপি কিছুই করছে না বলে তিনি দাবি করেছেন। বিজেপি অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন