বালুরঘাটে অধ্যক্ষ ঘেরাও

অনলাইনে ছাত্র ভর্তির মেধা তালিকা প্রকাশে কয়েক ঘণ্টা দেরির অভিযোগে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ উঠল টিএমসিপির বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কলেজে এই ঘটনা ঘটে। অনলাইনে ভর্তিকে সমর্থন জানালেও আদতে এর জেরে পড়ুয়াদের উপর থেকে তাদের কর্তৃত্ব আলগা হওয়ার আশঙ্কায় টিএমসিপি কলেজে অশান্তির সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৫ ০১:৩৩
Share:

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন টিএমসিপি কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

অনলাইনে ছাত্র ভর্তির মেধা তালিকা প্রকাশে কয়েক ঘণ্টা দেরির অভিযোগে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ উঠল টিএমসিপির বিরুদ্ধে।

Advertisement

শনিবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কলেজে এই ঘটনা ঘটে। অনলাইনে ভর্তিকে সমর্থন জানালেও আদতে এর জেরে পড়ুয়াদের উপর থেকে তাদের কর্তৃত্ব আলগা হওয়ার আশঙ্কায় টিএমসিপি কলেজে অশান্তির সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। শনিবার দুপুর পর্যন্তই কলেজের পঠনপাঠন ও কাজকর্ম চলে। ওই আন্দোলনের ফলে তা ব্যাহত হয়।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিনয় রবিদাস বলেন, ‘‘এবছরই কলেজে প্রথম অনলাইনে ভর্তি চালু হয়েছে। বাইরের যে সংস্থা ওই কাজ করছে, কারিগরি সমস্যার কারণেই শুক্রবার বিকেলের বদলে রাতে মেধা তালিকা প্রকাশ করে তারা। মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া ছাত্রদের ভর্তি নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না, আন্দোলনকারীদের এ কথা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’’

Advertisement

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামী সোমবার ২৯ জুন থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত ছাত্র ভর্তির দিন রয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে আসন ভিত্তিক প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় তালিকা প্রকাশ করে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। তাই কি কারণে ওই ঘেরাও বিক্ষোভ তা নিয়ে কলেজের শিক্ষকরাও ধন্দে। বালুরঘাট কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল শিক্ষক নেতা অজয় সাহা বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া হয়েছে। যন্ত্রপাতির ব্যাপার। ভুল হতেই পারে। কিন্তু কোনও ছাত্রছাত্রী বঞ্চিত হবেন না এ কথা বলার পরেও ওরা শুনল না। অধ্যক্ষকে অহেতুক ঘেরাও করলো। কী আর বলব।’’

অভিযোগ অস্বীকার করে বালুরঘাট কলেজের টিএমসিপির ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ভীম হালদার বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকেল চারটের মধ্যে অনলাইনে মেধা তালিকা প্রকাশের কথা থাকলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তা বের করতে পারেননি। রাত ১১টায় ওই তালিকা প্রকাশ করেন। আবেদনকারী ছাত্রছাত্রীদের কাছে মোবাইলে কোনও মেসেজ যায়নি। ফলে কারা তালিকাভুক্ত হলেন, তা জানতে না পেরে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। কয়েকজন ছাত্র ছাত্রীর নামও বাদ গিয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, এদিন আবেদনকারী পড়ুয়ারা কলেজে এসে বিক্ষোভ দেখান। সোমবার থেকে ভর্তি শুরু হবে। অথচ আবেদনকারীরা বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে। ওদের হয়ে বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে জানতে গিয়েছিলেন বলে তাঁর দাবি।

অবশ্য অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর সময় তাদের অন্ধকারে রেখে কেন মেধা তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে, তার জবাব চেয়ে টিএমসিপি নেতৃত্ব স্লোগান দিতে থাকেন। পরিচালন সমিতিতে কলেজের জিএস রয়েছেন। তা সত্ত্বেও ভর্তি নিয়ে তিনি কেন অন্ধকারে, সে প্রশ্নের জবাব দেননি ভীম।

এ দিন দুপুর ১টা থেকে কলেজের টিএমসিপি ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ভীম হালদারের নেতৃত্বে একদল পড়ুয়া ঘরের দরজা বন্ধ করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকলে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে বালুরঘাট থানা থেকে পুলিশ যায়। কলেজের অ্যাডমিশন কমিটির সদস্যরাও কলেজে পৌঁছান। তারা জানান, শুক্রবার রাতে পাশ অনার্স মিলিয়ে ৪,৭০০ জন ছাত্রছাত্রীর মেধা তালিকা প্রকাশ হয়েছে। এদিন আসন ভিত্তিক তালিকাও প্রকাশ হয়েছে। কোনও কারণে ওই মেধা তালিকা থেকে কোনও পড়ুয়ার নাম বাদ গেলে আবেদনপত্রের নমুনা কপি দেখালে তাদের ভর্তি করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়ার পর প্রায় দু’ঘন্টা বাদে বিকেল ৩টা নাগাদ অধ্যক্ষ ঘেরাও মুক্ত হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন