কালিয়াচক

কলেজে গোলমালের জেরে ফের বোমাবাজি

বুধবারের রেশ গড়াল বৃহস্পতিবারেও। গুলিতে ছাত্রের আহত হওয়ার ঘটনার পরদিনও বোমাবাজি হল কালিয়াচকে। বুধবার রাত থেকেই দফায় দফায় টিএমসিপি ও এসএফআইয়ের মধ্যে বোমাবাজি চলছে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে গুলি ছোড়ার অভিযোগও তুলেছে। এ দিন উদ্ধার হয়েছে দু’টি ব্যাগে ভরা অন্তত পঞ্চাশটি বোমা। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাডমিট কার্ড বিলি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমালের সূত্রপাত, সেখান থেকেই বোমাবাজি শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:১২
Share:

আহত ছাত্র।

বুধবারের রেশ গড়াল বৃহস্পতিবারেও। গুলিতে ছাত্রের আহত হওয়ার ঘটনার পরদিনও বোমাবাজি হল কালিয়াচকে।

Advertisement

বুধবার রাত থেকেই দফায় দফায় টিএমসিপি ও এসএফআইয়ের মধ্যে বোমাবাজি চলছে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে গুলি ছোড়ার অভিযোগও তুলেছে। এ দিন উদ্ধার হয়েছে দু’টি ব্যাগে ভরা অন্তত পঞ্চাশটি বোমা। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাডমিট কার্ড বিলি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমালের সূত্রপাত, সেখান থেকেই বোমাবাজি শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা নাগাদ কালিয়াচক কলেজের সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে অন্তত ১০ মিনিট বোমাবাজি চলে। পরে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে এক যুবককে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সৈয়দ শেখ। কালিয়াচকের সুলতানগঞ্জ এলাকায় ধৃতের বাড়ি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও থমথমে রয়েছে গোটা এলাকা। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এলাকা থেকে হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। টহলদারি চলছে।’’

Advertisement

কলেজে সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে অ্যাডমিট কার্ড বিলির লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। এ বছর কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে টিএমসিপিকে হারিয়ে এসএফআই ক্ষমতায় এসেছে। তার পর থেকেই মাঝে মধ্যেই কলেজে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। ফর্ম বিলিকে কেন্দ্র করে গোলমালে উত্তেজনা আরও বাড়ে। বুধবার রাত আটটা নাগাদ টিএমসিপির কিছু ছেলেদের এসএফআই সমর্থকেরা ঘিরে ধরে বলে অভিযোগ। তখনই মারধর-পাল্টা মারধর ও দু’পক্ষের ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়। সেই সঙ্গে গুলিও চলে বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের সাধারণ বিভাগের ছাত্র সাদিকুল শেখ। বাড়ি কালিয়াচকের সুলতানগঞ্জ এলাকাতে। তাঁকে রাতেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইংরেজবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বর্তমানে তাঁর পরিস্থিতি স্থিতিশীল। সাদিকুল বলেন, ‘‘এলাকায় বোমা-গুলির শব্দ শুনে বাড়ির বাইরে বের হয়েছিলাম। হঠাৎই একটি গুলি আমার কোমরের ডান দিকে লাগে।’’ জখম ছাত্র এসএফআই সমর্থক বলে জানা গিয়েছে।

এ দিন দুপুরে ফের উত্তেজনা ছড়ায়। দু’পক্ষই বোমাবাজি শুরু করে। এ দিন কলেজ খোলা ছিল। তবে যেহেতু প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে তাই পঠনপাঠন বন্ধ। তবে কলেজের প্রশাসনিক কাজকর্ম চলছে। এলাকায় এমন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এই কলেজের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। বেশ কয়েকটি অস্ত্র কারখানাও উদ্ধার করেছি। বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে আমাদের অভিযান চলছে, আরও বাড়ানো হবে।’’

এ দিনের ঘটনার পরেও পরস্পরকে দুষেছে দু’পক্ষয় এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘‘কালিয়াচক কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আমরা জয়ী হওয়ার পর থেকেই টিএমসিপির ছেলেরা আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালাচ্ছে। এ দিন আমাদের ছেলেদের উপরে দলবল নিয়ে হামলা করেছে।’’ যদিও টিএএমসিপি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেছে।টিএমসিপির জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস অভিযোগ করে বলেন, ‘‘এখানে আমাদের ছেলেরা জড়িত নেই।এটা তাদের নিজেদের মধ্যে গন্ডোগল।আর কলেজে সন্ত্রাস করে নির্বাচন জিতেছে এসএফআই।তারা কলেজে গোলমাল পাকায়।’’

কালিয়াচক কলেজের অধ্যক্ষা বিজয়া মিশ্র বলেন, ‘‘ঘটনাটি কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা।তাই আমার জানা নেই।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন