১৭ কোটি নয়ছয়, ধৃত বাগান-কর্তা

সিআইডি সূত্রের খবর, পরেরদিনই তাকে দার্জিলিং জেলা আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হয়। আপাতত ১৭ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। আরও কত টাকা তছরূপ করা হয়েছে, তা অফিসাররা খতিয়ে দেখছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সিঙ্কোনা প্ল্যান্টেশনের প্রাক্তন ডিরেক্টর জিসি সুব্বাকে গ্রেফতার করল সিআইডি। দার্জিলিঙের রংলি রংলিয়ত থানার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার সিআইডির অফিসাররা তাকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

সিআইডি সূত্রের খবর, পরেরদিনই তাকে দার্জিলিং জেলা আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হয়। আপাতত ১৭ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। আরও কত টাকা তছরূপ করা হয়েছে, তা অফিসাররা খতিয়ে দেখছেন। শুক্রবারও ধৃতকে টানা জেরা করা হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে তিন বছর ওই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ডিরেক্টর হিসাবে অবসর নেওয়ার পর বিমল গুরুঙ্গ নেতৃত্বাধীন জিটিএ তরফে অভিযুক্তকে সিঙ্কোনা বাগানের টেকনিক্যাল আডভাইজার হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল।

দার্জিলিং জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী পঙ্কজ প্রসাদ বলেন, ‘‘সিআইডি ১৪ দিনের হেফাজত চেয়েছিল। বিচারক ১০দিন মঞ্জুর করেছে। দুর্নীতির মধ্যে আর কী কী রয়েছে তা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৩ সালে অবসর নেওয়ার পর সিঙ্কোনার ডিরেক্টর হন স্যামুয়েল রাই। তিনি দায়িত্ব নিয়েই হিসাবপত্রে নানা অসঙ্গতি দেখতে পান। বাগানের তরফে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে বিষয়টি জানানো হয়। ২০১২ সালে সিঙ্কোনা বাগানটি অবশ্য জিটিএ-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, দায়িত্ব থাকলেও অভিযুক্ত ব্যাঙ্কের কোনও নথি হস্তান্তর করছিলেন না। আয়, ভ্যাট এবং টেন্ডারেও গরমিল ধরা পড়ে। গত ডিসেম্বর মাসে রংলি রংলিয়ত থানায় ডিরেক্টর অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের তরফে মামলাটি সিআইডিকে দেওয়া হয়।

গোয়েন্দা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত দায়িত্ব থাকার সময় নিজেই একবার ৬৩ লক্ষ টাকা তোলেন। দায়িত্ব ছাড়ার পর নথিপত্র, ব্যাঙ্কের দায়িত্ব না বুঝিয়ে দিয়ে ফের ৯২ লক্ষ টাকা তুলে নেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার ৮ কোটি, ন্যাশনাল মেডিসিনাল প্ল্যান্ট মিশন, হর্টিকালচার মিশন এবং বাম্বু মিশনের কোটি কোটি টাকার কোনও হিসাব নেই।

তেমনিই, সিঙ্কোনার ছাল-সহ নানা প্রডাক্টের বিক্রির থেকে আয় করা বহু টাকার হিসাব নেই। সব মিলিয়ে তা ১৭ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। মূলত ২০১০-১১ সাল এবং ২০১৩-১৪ সালে দুর্নীতি হয়েছে বলে সামনে এসেছে। সিআইডির এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, দুর্নীতি, তছরূপের পিছনে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে।

অভিযুক্ত জিসি সুব্বা অবশ্য গোয়েন্দাদের কাছে দাবি করেছেন, তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। আইনের পথে তার প্রমাণ হবে বলে দাবি করেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন