গরমের ছুটিতে বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে দার্জিলিঙে রওনা হয়েছিলেন কলকাতার বাসিন্দা, আইনজীবী অমৃতা চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সকালে এনজেপিতে নেমেই যানজটের খবর পান। কোনওক্রমে পৌঁছন কার্শিয়াং।
ততক্ষণে অগ্নিগর্ভ দার্জিলিং। কোনওমতে পৌঁছে হোটেলের রিসেপশনে বাবা-মাকে নিয়ে আশ্রয় নেন অমৃতা। সেখানেও চলে ভাঙচুর। সন্ধের পর পুলিশের সাহায্যে বাবা-মাকে নিয়ে সরকারি অতিথি নিবাসে যান। রবিবার পর্যন্ত ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা থাকলেও এখনই সমতলে নেমে আসবেন কি না, তা ভাবছেন অমৃতা। ফিরবেনই বা কী ভাবে, তা ভেবেও দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে।
শুধু অমৃতা নয়, বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে পাহাড়ে থাকা কয়েক হাজার পর্যটকের ঘুম উবে গিয়েছে। আজ, শুক্রবার বন্ধ ডেকেছে মোর্চা। অনেকে হোটেলবন্দি থাকলেও বহু পর্যটক আতঙ্কে এ দিন রাতেই পাহাড় ছাড়তে শুরু করেছেন। মওকা বুঝে রাতরাতি গাড়ি ভাড়াও দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন প্রত্যেক পর্যটকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে তবেই ফিরবেন তিনি।
এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকেই এনজেপি-সহ বিভিন্ন জায়গায় হেল্প ডেস্ক খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে বাস, গাড়ি ও হোটেলের হদিশ দেওয়া হবে। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে পাহাড়ে থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা সকাল থেকে রাস্তায় থাকব। পর্যটকদের আতঙ্কের কারণ নেই।’’
পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও প্রধান সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আজ, ভোর থেকে দু’ ঘণ্টা পরপর কলকাতার উদ্দেশে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিবহণ দফতরের অফিসারেরা জানান, দার্জিলিঙে বর্তমানে শিলিগুড়ি থেকে ৮টি বাস চলাচল করছিল। তারমধ্যে একটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী বলেন, “পাহাড়ের বড় অংশের পর্যটক কলকাতার। তাঁদের ফেরত পাঠানোর জন্য নিগম প্রস্তুত। যে ক’টি বাস প্রয়োজন হবে তার সবই আমরা দেব।”
রাতভর সমতলে দিকে নেমে আসা পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে ভোর থেকেই বাগডোগরা বিমানবন্দর খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিমানবন্দর অধিকর্তা রাকেশ সহায়। তিনি জানান, রেঁস্তোরা, শৌচালয়, নিরাপত্তা কর্মীরা ভোর থেকেই যাত্রীদের সাহায্যে থাকবেন।