নাকাল: এ দিনই সকালে ভ্যাট পরিষ্কার করতেও আগুন লাগানো হয় শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
রাতে আচমকা শহর ধোঁয়ায় ভরে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ ছড়াল শিলিগুড়িতে। রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। শহরের বাসিন্দারা, কাউন্সিলরদের অনেকে বাইরে বেরিয়ে খোঁজখবর শুরু করেন। শহরের সেবকরোড, হিলকার্ট রোড থেকে প্রধাননগর এলাকা, দেশবন্ধু পাড়া, নিউ জলপাইগুড়ি এলাকা সব জায়গায় ধোঁয়ায় ছড়িয়ে যায়। বাইরে যাঁরা বেরিয়ে আসেন তাঁদের অনেকে জানান চোখ জ্বালা করছিল। পরে জানা যায়, আশিঘর থেকে এক কিলোমিটার ভিতরে নেপালিবস্তিতের কাছে বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চল এলাকায় শুকনো পাতাতে আগুন ধরেছে। এছাড়াও গজলগোবার কাছেও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসু জানান, এই ধরনের ঘটনার পিছনে শুধু আগুন লাগাই নয়, থাকতে পারে আরও অনেক কারণ।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক বিশ্বজিৎ দত্ত কোচবিহার থেকে শহরে ফিরছিলেন আশিঘর লাগোয়া ওই রাস্তা দিয়ে। তিনি বলেন, ‘‘নেপালি বস্তি লাগোয়া ওই এলাকায় পাতাতে আগুল লেগে ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল।’’
প্রায় ৬০০ বর্গ মিটারের মতো এলাকায় শুকনো পাতা জ্বলতে থাকে বলে দাবি। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সেখানে আগুন লাগে বলে মনে করা হচ্ছে। ধোঁয়াও বাড়তে থাকে। সেই থেকে কয়েক ঘণ্টা শহরে ধোঁয়ায় ছেড়ে যায়।
কেউ বলেন, জলেশ্বরী এলাকায় কোথাও আগুন লেগেছে। আবার অনেকের বক্তব্য, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন চত্বর এলাকায় রেলের তরফে পুরনো জিনিস পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু স্পষ্ট করে কোনও কারণ কেউ কিছু বুঝতে না পারায় রহস্য বাড়তে থাকে। শহরে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আগেও একাধিকবার আগুন লেগেছে। এবং সেই ধোঁয়া শহরে ছড়িয়ে পড়ে। পুর কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর শুরু করেন। পরিচিতদের কাছ থেকে খবর পেয়ে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও পুর কমিশনারে বিষয়টি জানিয়ে খোঁজ নিতে বলেন। পুলিশও ধোঁয়ার উৎস খুঁজতে তৎপর হয়ে ওঠে। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘আচমকা ধোঁয়া কেন হবে? কী কারণে বোঝা যাচ্ছে না। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’
পুরসভার আধিকারিকরা খোঁজ নিযে যখন যেমন তথ্য পাচ্ছিলেন ফোনে মেয়রকে জানাতে থাকেন। মেয়র বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ইস্টার্ন বাইপাসের দিকে বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চলে শুকনো পাতায় আগুন লেগে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসের হাওয়ায় বনাঞ্চলে শুকনো পাতায় এ ভাবে আগুন লাগার ঘটনা আগেও একবার ঘটেছিল। শহর ধোঁয়ায় ভয়ে গিয়েছিল।’’
এলাকার বাসিন্দারা বাইরে বেরিয়ে ধোঁয়া নিয়ে হইচই শুরু করেছে দেখে বেরিয়ে আসেন ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপন দাসও। খোঁজ খবর শুরু কেন। তিনি জানান, কিছু লোক তাঁকে জানিয়েছে, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দিকে রেলের তরফে পুরনো জিনিস পোড়ানো হচ্ছে।
কিন্তু তা কতদূর ঠিক তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী পরেশ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা সকলেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। পোড়া গন্ধও নাকে লাগছিল। চোখ জ্বলছিল।’’ পুরসভার কয়েকজন কর্মী-আধিকারিক লাগোয়া জলপাইগুড়ি থেকে আসেন। খবর পেয়ে তারাও পরিচিতদের ফোন করে ধোঁয়ার বিষয়ে জানতে চান।